শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

একুশের চেতনাই হচ্ছে বাঙালি জাতি সত্ত্বা বিকাশের অন্যতম মাধ্যমঃ এম. এ. রশীদ

নিজস্ব প্রতিবেদক *

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম. এ. রশীদ

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি), চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্যোগে গত বুধবার (একুশে ফেব্রুয়ারি) যথাযোগ্য মর্যাদা আর ভাবগাম্ভে র‌্যের মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উদযাপন করা হয়। সকালে জাতীয় পতাকা (অর্ধনমিত) উত্তোলনের পর প্রভাতফেরি করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম. এ. রশীদ এর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক প্রকৌশলী প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণ করেন। পরে কেন্দ্রের মিলনায়তনে প্রকৌশলী সদস্যদের সন্তানদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম. এ. রশীদ এর সভাপতিত্বে এবং কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী শেখ রাব্বে তৌহিদুল ইসলাম, পিইঞ্জ. এর সঞ্চালনায় শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভায় বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কথা সাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী মূখ্য আলোচক অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।bsrm

আলোচনা সভায় বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানে ৫৬ শতাংশ মানুষ বাংলায় কথা বলার পরও ১৯৪৮ সালে বাংলাকে মাতৃভাষা হিসেবে রাষ্ট্রভাষা না করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর প্রতিবাদে ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতার রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ভাষা আন্দোলন এই অঞ্চলের জনপদকে একত্রিত করে স্বাধীনতা যুদ্ধে ধাবিত করে। তিনি বলেন, সঠিক বাংলা ভাষা চর্চা না করে ফেসবুক, ইউটিউব ও টিকটকের মাধ্যমে প্রকৃত বাংলা ভাষার বিকৃতি করা হচ্ছে। সন্তানদের বাংলা ছড়া, গল্প, কবিতা ও সাহিত্য পাঠের মাধ্যমে মৌলিকভাবে প্রকৃত শিক্ষিত হওয়ার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। বিশ্বজিৎ চৌধুরী ভাষা আন্দোলনের সঠিক বার্তা আগামী প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তার উপরও আলোকপাত করেন।

কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এম. এ. রশীদ বলেন, একুশের চেতনাই হচ্ছে বাঙালি জাতি সত্ত্বা বিকাশের অন্যতম মাধ্যম। বাঙালি জাতি একুশের চেতনা নিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধে উদ্ধুদ্ধ হয়েছিল। তিনি দুঃখ করে বলেন, এই চেতনা হতে অনেকেই সরে এসেছে এবং এখনো আমরা যথাযথভাবে হৃদয়ে ধারণ করতে পারিনি। একুশের চেতনা কখনো ভুলুন্ঠিত করা যাবে না, তরুণ এই প্রজন্মকে নিয়মিত শুদ্ধ বাংলা চর্চার মাধ্যমে একুশের ধারায় গড়ে তুলে, বাংলা ভাষাকে বিশে^র বুকে সমুন্নত করতে এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রকৌশলী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন ও প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন, পিইঞ্জ., প্রাক্তন ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী উদয় শেখর দত্ত ও প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক এবং সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক  বেদারুল আলম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।ads din

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ভাইস-চেয়ারম্যান (একা. এন্ড এইচআরডি) প্রকৌশলী রাজীব বড়ুয়া। সিনিয়র প্রকৌশলী নিখিল রঞ্জন দাশ, প্রকৌশলী তোফাজ্জল আহমেদ ও কাউন্সিল সদস্য প্রকৌশলী প্রদীপ বড়ুয়া ও প্রকৌশলী রূপক বড়ুয়াসহ অনেকেই একুশের স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন।

এছাড়া দেশাত্ববোধক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক উপ-কমিটির সদস্য-সচিব প্রকৌশলী অনুপম দত্ত এর গ্রন্থনায় এবং প্রকৌশলী অচিন্ত্য কুমার এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নিজস্ব শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সবশেষে চিত্রাংকন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার এবং প্রতিযোগিতায় সকল অংশগ্রহণকারী শিশু কিশোরদের মাঝে উৎসাহ পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও