বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিঃ ৫ জেলের মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক *

bsrm

বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে কক্সবাজার উপকূলে ডুবে গেছে ছয়টি ফিশিং ট্রলার। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচ জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও পাঁচজন।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইনানী পয়েন্টে এবং বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে লাবণী চ্যানেলে ঝড়ো বাতাসের কবলে পড়ে ট্রলারগুলো ডুবে যায়। পরে এসব ট্রলার সৈকতের কলাতলীসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ভেসে আসে।

এরমধ্যে কক্সবাজার শহরের লাবণী চ্যানেলে ‘এফবি রশিদা’ নামে একটি এবং ইনানী পয়েন্টে ‘এসবি আব্দুস ছামাদ সাহা’সহ পাঁচটি ট্রলার ভেসে ওঠে।ads din

এসব ট্রলারে থাকা মাঝিরা কূলে উঠতে পারলেও পাঁচ জেলে ডুবে যান। এরমধ্যে শুক্রবার লাবনী পয়েন্ট থেকে মোহাম্মদ জামাল, (৩৭) ও নুরুল আমিন নামে দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আর শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নাজিরারটেক পয়েন্ট থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আক্তার কামাল।

এছাড়া দুপুরে ইনানী মোহাম্মদ শফির বিল এলাকা সৈকত থেকে ‘এসবি আব্দুস ছমাদ সাহা’ ট্রলারের দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ আব্দুল করিম (৩৫) নামে একজনের পরিচয় পাওয়া গেলেও অপরজনের পরিচয় নিশ্চিত করা যায়নি। তারা দুজনই চট্টগ্রামের বাঁশখালী রায়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) তানভির হোসেন বলেন, এখনো কয়েকজন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন বলে বোট মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, সাগর উত্তাল ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৬৫টি ট্রলারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। তবে শনিবার সকালে সব ট্রলার ফিরে আসার খবর পাওয়া গেলেও কক্সবাজার সদর এলাকার তিনটি মাছ ধরার ট্রলার ৬৪ মাঝি-মাল্লাসহ নিখোঁজ হয়। তাদের উদ্ধারের জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

কক্সবাজার পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, দুদিনের টানা বৃষ্টিতে এই ওয়ার্ডের ১০ হাজার মানুষের ক্ষতি হয়েছে। আরও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এই ওয়ার্ডে ৮০ হাজার শ্রমজীবী মানুষ অচল হয়ে যাবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যাবে। আপাতত যেখানে সমস্যা রয়েছে সেখানে ত্রাণ পৌঁছাতে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর এখনো উত্তাল। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগরে অবস্থান করা সব ধরনের মাছ ধরার ট্রলারকে নিরাপদে চলে আসতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সারাদিন বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় উখিয়া, চকরিয়া, রামু, ঈদগাঁওসহ নিম্নাঞ্চলে জমা পানি নামতে শুরু করে। তবে, পাহাড়ে বৃষ্টিপাত হওয়ায় অনেক নদীতে ঢলের পানি ছিল। এরমধ্যে জলাবদ্ধতার কারণে এখনো পানিবন্দি অর্ধশত গ্রামের মানুষ। পানি কমতে থাকায় রাস্তার ক্ষত ভেসে উঠছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান বলেন, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ২১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাত আরও কমে আসবে।

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও