ঢাকা প্রতিনিধি *
রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ভবনটির মালিক প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আসামি করা হয়েছে ভবনের মালিকসহ ৪ জনকে। রাজউকের পরিদর্শকদের ‘ম্যানেজ’ করে আসামিরা অবৈধভাবে ব্যবসার সুযোগ কাজে লাগায় বলে মামলা সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) দিবাগত রাতে রমনা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডসহ আরও কিছু আইনের ধারা উল্লেখ রয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু আনসার।
মামলায় ভবনটিতে থাকা ফাস্টফুড দোকান চুমুক’র মালিক আনোয়ারুল হক (২৯), কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের মালিক সোহেল সিরাজ (৩৪) এবং ভবনের ম্যানেজার মুন্সি হামিমুল আলম বিপুলকে (৪০) আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আনোয়ারুল ও বিপুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এখন দুর্ঘটনার আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় করা মামলার এজাহারে ভবনের মালিকসহ চার জনের নাম উঠে এসেছে। তদন্ত করে আটক করা হবে।
পুড়ে যাওয়ার আগে রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবন
মামলার এজাহারে বলা হয়, আগুনে পুড়ে যাওয়া গ্রিন কোজি কটেজের মালিক আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ। ভবনটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন মুন্সি হামিমুল আলম। নিয়ম ভঙ্গ করে ভবনটিকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছিল। আসামিরা অবৈধভাবে সেখানে রেস্টুরেন্ট খুলে ব্যবসা করছিলেন। ‘রাজউকের লোকদের ম্যানেজ করে’ তারা এটা করেছিলেন।
আগুন লাগার কারণ হিসেবে এজাহারে বলা হয়, ভবনটির নিচ তলায় থাকা রেস্টুরেন্টে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লাগে। পরে তা পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন না করে গ্যাসের সিলিন্ডারগুলো সেখানে মজুদ করে রাখা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে আরও জানা যায়, ভবনটি আবাসিক ভবন হিসেবে নির্মিত হলেও পরবর্তীতে উল্লেখিত আসামিসহ ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য বাণিজ্যিক সনদ সংগ্রহ করেন। রেস্টুরেন্টের মালিকরা রান্না করার জন্য গ্যাস সিলিন্ডার বা চুলা ব্যবহারে ফায়ার সার্ভিস থেকে অনুমতি নেননি। রেস্টুরেন্টগুলোতে অগ্নি নির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত ফায়ার এক্সটিংগুইশারসহ অন্যান্য ফায়ার ফাইটিং যন্ত্রপাতি ছিল না। এমনকি ছিল না ভবনটিতে ফায়ার এক্সিট সিঁড়িও।