শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের নতুন কমিশনারের সাথে বিএসএএ কর্মকর্তাদের মতবিনিময়সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের নবনিযুক্ত কমিশনার মো. জাকির হোসেনের সাথে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএএ) এর চেয়ারম্যান ও পরিচালকবৃন্দের এক সৌজন্যমূলক মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএসএএ এর চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ নবনিযুক্ত কমিশনার জাকির হোসেনকে সকল সদস্য এজেন্টের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান এবং ব্যস্ততার মধ্যেও মতবিনিময়ের জন্যে সময় দেয়ায় আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত সভায় কমিশনারের সাথে কাস্টম কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত কমিশনারবৃন্দ, যুগ্ম-কমিশনারবৃন্দ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফের সাথে ভাইস-চেয়ারম্যান মো. রিয়াজউদ্দিন খান এবং পরিচালকবৃন্দ যথাক্রমে মামুনুর রশিদ, খাইরুল আলম সুজন, এস এম এনামুল হক, মোহাম্মদ আসলাম, মোহাম্মদ রাশেদ, কফিল উদ্দিন আহমেদ ও মো. এ এইচ এম কামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সংগঠনের চেয়ারম্যান এস এম আরিফ কাস্টম এবং বন্দরের সাথে শিপিং এজেন্টদের দীর্ঘকালের পুঞ্জিভুত সকল সমস্যা উপস্থাপন করেন এবং সেসব সমস্যা কমিশনারের সদয় অবগতি ও দ্রুত বাস্তবায়নের জন্যে পেশ করেন।
• কাস্টমের কার্যক্রম ৭দিন ২৪ঘণ্টা চালু রাখাঃ কাস্টমের কার্যক্রম ৭দিন ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার আদেশ থাকলেও কাস্টম হাউজের কার্যক্রম পুরোপুরি সচল থাকে না। সভায় আলোচনার প্রেক্ষিতে কমিশনার কাস্টমের কার্যক্রম ৭দিন ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনাপূর্বক দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন।
• অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে নতুন কমিশনারকে জানানো হয় যে, ৭দিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকার পুরোপুরি ফল পেতে হলে অন্যান্য সংস্থাকেও প্রতিদিন ২৪ঘণ্টা কার্যক্রম চালু রাখতে হবে।যেমন- শুক্রবার, শনিবার ও সরকারি ছুটি বিশেষ করে দুই ঈদের ছুটিতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবহারকারীরা তাদের কার্যক্রম ৭দিন ২৪ ঘণ্টা হিসেবে চালু রাখলে এর সুফল পাওয়া যাবে।
• ASYCUDA তে DG Cargo এর IGM সংশোধনঃ বিগত কিছুদিন যাবত ASYCUDA তে দাখিলকৃত DG Cargo সংক্রান্ত IGM নৌবাহিনী কর্তৃক প্রদত্ত কাস্টম এবং বন্দরের কাছে অস্পষ্ট থাকে এবং কাস্টম কর্তৃপক্ষের কাছেও IGM সংশোধন করা সম্ভব হয় না।যার কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এ DG Cargo প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফেরত চলে যায়। কমিশনারের পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বন্দর, কাস্টম, নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের যৌথ অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ সমস্যাটি সমাধান হয় এবং IGM সংশোধন ফিও রহিত করা হয়- যার জন্যে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কমিশনারকে ধন্যবাদ জানানো হয়। অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ আশা করে যে, এখন থেকে এ ধরনের সমস্যা থাকবে না এবং কোনো কন্টেইনারও ফেরত যাবে না।
• MLO Code: MLO Code সহজীকরণ ও দ্রুততার সাথে প্রদানের ব্যাপারে কমিশনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করেন।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ নবনিযুক্ত চট্টগ্রাম কাস্টম কমিশনার মো. জাকির হোসেনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছে

• সময়মতো আমদানি পণ্যের নিলাম ও ধ্বংসকরণঃ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কমিশনারকে দ্রুততার সাথে সময়মতো আমদানি পণ্যের নিলাম সম্পাদন এবং পচনশীল পণ্য যথাসময়ে ধ্বংসের অনুরোধ করা হয়। এতে যথাসময়ে রাজস্ব আদায় হবে,কন্টেইনারসমূহ পুনরায় ব্যবহার করা যাবে এবং বন্দরে জটের সৃষ্টি হবে না।বর্তমানে নয় হাজারেরও অধিক নিলাম/ধ্বংসযোগ্য পণ্যের কন্টেইনার বন্দরে পড়ে আছে এবং এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্যে কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়।
• অনলাইন ফাইনাল এন্ট্রিঃ জাহাজ বহিনোঙ্গর/কুতুবদিয়া আগমনের ২৪ঘণ্টার মধ্যে শিপিং অ্যাজেন্ট, কাস্টম প্রতিনিধি ও সার্ভেয়ার সংশ্লিষ্ট দলিলাদিসহ জাহাজে স্বশরীরে গমন করতঃ ফাইনাল এন্ট্রি দাখিল করতে হয়।দূরত্বের কারণে সবসময় জাহাজে স্বশরীরে গমন করে ফাইনাল এন্ট্রি দাখিল করা দূরহ হয়। তাছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সময় স্বশরীরে গমন করতঃ সমুদয় কাজ সম্পাদন করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।কিন্তু ফাইনাল এন্ট্রি সংক্রান্ত কার্যাবলী সময়মতো সম্পাদন করা না হলে কাস্টম কর্তৃপক্ষ কর্তৃক জরিমানা আরোপ করা হয়। উল্লেখ্য, নৌবাণিজ্য দপ্তর শিপিং মাস্টারের কার্যালয়সহ অন্যান্য দপ্তরের কার্যাবলী অনলাইনে সম্পাদন করা হচ্ছে।ফলে তথ্যপ্রযুক্তির অব্যাহত উন্নতির প্রেক্ষাপটে কাস্টম কর্তৃপক্ষের সমুদয় কাজ অনলাইনে সম্পাদন করা সময়ের দাবী। তাতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে এবং ঝুঁকি হ্রাস পাবে। ফাইনাল এন্ট্রিসহ কাস্টমের সমুদয় কার্যক্রম অনলাইনে সম্পাদনের ব্যাপারে বিএসএএ এর সকল প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের ব্যাপারে কশিশনার আশ্বাস প্রদান করেন।
• F-Division- বর্তমানে F-Division এর অফিস দূরবর্তী অবস্থায় (বোটক্লাবের পাশে) বিধায় F-Division এর বুকিং সেল কাস্টম হাউজে স্থানান্তর অথবা বুকিংসংক্রান্ত কার্যাবলী অনলাইনে সম্পাদনের লক্ষ্যে অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক প্রদত্ত প্রস্তাবনা বিবেচনার ব্যাপারে কমিশনার আশ্বাস প্রদান করেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের VTMS এর সাথে কাস্টম কর্তৃপক্ষের সংযোগ স্থাপনঃ চট্টগ্রাম বন্দরের VTMS সাথে কাস্টম কর্তৃপক্ষের সংযোগ স্থাপন করা হলে জাহাজের গতিবিধি ও সামগ্রিক কার্যক্রম কাস্টম কর্তৃপক্ষের গোচরিভুত থাকবে এবং উভয় পর্যায়ে যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করা সহজতর হবে।
পরিশেষে,কমিশনারের বলিষ্ঠ পদক্ষেপের মাধ্যমে বিরাজমান সকল সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়ায় এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্যে বিএসএএ এর পক্ষ থেকে পুনরায় তাঁকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। সেই সাথে অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় যে, নবনিযুক্ত কমিশনার জাকির হোসেন তার গতিশীল নেতৃত্ব,সময়োপযোগী নির্দেশনা ও সিদ্ধান্তের মাধ্যমে প্রস্তাবিত সকল সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।bsrm

সর্বশেষ

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক, আজ বসন্ত

এই বিভাগের আরও