নিজস্ব প্রতিবেদক *
চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট-স্টেশন রোড এলাকায় বেআইনিভাবে রাস্তা-ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদপরবর্তী মনিটরিং কার্যক্রমে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ১২শ জনকে আসামি করা হয়।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভোরে কোতোয়ালী থানায় চট্টগ্রাম সিটি করেপোরেশনের (চসিক) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দপ্তরের পেশকার আবু জাফর চৌধুরী বাদি হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় নাম উল্লেখ থাকা আসামিরা হলেন, চট্টগ্রাম ফুটপাত হকার্স সমিতির সভাপতি নুরুল আলম লেদু (৫৯) ও সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম (৫০), মেট্রোপলিটন হকার্স সমিতির সভাপতি মিরন হোসেন (৫২), সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম (৪৫), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম ভূঁইয়া (৪৭), সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য শাহীন আহমদ (৪৬) ও সদস্য নূর মোহাম্মদ (৪৫), চট্টগ্রাম হকার্স লীগের সাবেক সভাপতি ঋষি বিশ্বাস (৫৩) ও সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ রনি (৪৮), চট্টগ্রাম ফুটপাত হকার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক তারেক হায়দার (৩৮) এবং সোহেল (৩৫)।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) চসিকের উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় দ্রুতবিচার আইনে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১২শ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এখনো।’
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নগরের নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকায় চসিকের উচ্ছেদের মাধ্যমে খালি হওয়া ফুটপাত-রাস্তায় যাতে অবৈধ হকাররা আর কোনো দোকান বা স্থাপনা বসাতে না পারে সেজন্য গতকাল (সোমবার) তদারকিতে যান চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা, শাহরিন ফেরদৌসী, মো. সাব্বির রহমান সানি ও রেজাউল করিম। বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে নতুন রেলস্টেশন এলাকার পাবলিক টয়লেটের সামনে রাস্তার ওপর বসানো জেনারেটর পাম্প উচ্ছেদ শেষে নিউমার্কেটের দিকে অগ্রসর হলে মামলার আসামিরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে দলবদ্ধ হয়ে উস্কানিমূলক স্লোগান, চিৎকার চেচামেচি ও যানবাহন ভাঙচুর করে ত্রাস সৃষ্টি করে। আসামিরা অতর্কিতভাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ওপর লাঠিসোঁটা, হকস্টিক নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং তাদের কর্তব্যকাজে বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ আসা্মিদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা পুলিশের কথা না শুনে আমাদের ও পুলিশদেরকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশনের মোবাইল কোর্টের সহযোগী টিম ও দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এসে ম্যাজিস্ট্রেটদের রেলস্টেশন সংলগ্ন গণশৌচাগারে নিয়ে কোনোরকমে রক্ষা করে। নিক্ষিপ্ত ইট পাটকেলের আঘাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতী সর্ববিদ্যা পায়ে আঘাত পান। আসামিরা ওই সময় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইল কোর্টের সহযোগী টিম ও দায়িত্বরত পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা করলে কর্পোরেশনের উচ্ছেদকর্মী রুহুল আমিনের (৫০) মাথা ফেটে যায় এবং স্ট্রাইকিংফোর্সের সদস্য দীলিপ দাশ (৪৫) কোমরে জখম হন। এছাড়া আসামিদের নিক্ষেপ করা ইট-পাটকেলের আঘাতে পুলিশের কয়েকজন সদস্যও জখম হন। আসামিরা ঘটনাস্থলে থাকা লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে মিছিল-সমাবেশ করে এবং রাস্তায় থাকা সিটি কর্পোরেশনের ৩টি মিনিট্রাক ও একটি পেলোডার গাড়ির গ্লাসসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।