[bangla_date] || [english_date]

ক্রীড়া প্রতিবেদক *

চিন্তা করা যায়! সেই যে ১৯৮৮ সালে অলিম্পিক গেমসে মেয়েদের দলগত বিভাগে অংশ নিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া, এখনও শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে। তাদের এখন পর্যন্ত কেউ টলাতে পারেনি। এবার ইনভেলিডসের আর্চারি মাঠে প্রতিপক্ষ চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিলেও কোরিয়ানদের আসনচ্যুত করতে পারেনি। ৩৬ বছর ধরে অলিম্পিকে তাদের অবিচ্ছেদ্য সাফল্য দেখে অনেকেরই ভ্রু কুচকাচ্ছে। আবার অবাক হচ্ছে। কেউ কেউ গভীর খোঁজ খবর নিয়ে এর রহস্য খুঁজে বের করে চওড়া হাসিও হেসেছেন।

তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম বাংলাদেশের জার্মানির কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক। হাইপ্রোফাইল কোচ হিসেবে সব দেশের আর্চারির খবর তার বেশ ভালোই জানা। দক্ষিণ কোরিয়ার এমন সাফল্য ফ্রেডরিকের চোখ এড়ায়নি। তার ভাষায় কোরিয়ানরা আসলেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী, ‘কোরিয়ানরা আর্চারিতে অনেক ভালো দল। এটা সবাই জানে। ওদের এই খেলার প্রতি আত্মত্যাগ বলে বোঝানো যাবে না। মেয়েদের দলগত বিভাগে অনেক দিন ধরেই তাদের সাফল্য। এবারও প্যারিসে এসে তাদের কেউ আটকাতে পারেনি। ফাইনালে চীন লড়াই করেছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেনি। আমার মনে হয় এই ইভেন্টে ওদের হারানো বেশ কঠিন।’

এবার সোনার পদক জিতেছেন লিম সি হিওন, সু হিওন ও জি হুন ইয়াং। আমেরিকার পর দক্ষিণ কোরিয়া টানা ৯টি আসরে কোনও একটি ইভেন্টে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখতে পেরেছে। আমেরিকানরা ৪০০ মিটার মিডলে সাঁতারে ১৯৮৪ থেকে ২০২০ টোকিও গেমস পর্যন্ত টানা সোনা জয়ের রেকর্ড গড়েছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ার এই দলের সবার বড়সড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা সেভাবে নেই। কারও কারও অলিম্পিকে প্রথম অংশগ্রহণ। কারও আবার অল্পস্বল্প অভিজ্ঞতা। এই যেমন এশিয়ান গেমস কিংবা একবার করে অলিম্পিক অভিজ্ঞতা। এবার তো তারা ইউরোপে বৃষ্টি ও বাতাসের বিপক্ষে লড়েছে। অলিম্পিকের জন্য তারা আসার আগে বিশেষ প্রশিক্ষণও নিয়েছে। নদীর তীরে অনুশীলন কিংবা ফুটবল মাঠে বাতাস এবং শব্দের মধ্যে নিজেদের প্রস্তুতি সেরেছে। খেলার মাঝে তাদের কোনও আবেগ কাজ করেনি। অনেকটা রোবটের মতো ১০ মেরে গেছেন।

শুধু কি তাই! তাদের জিনসিওন জাতীয় স্টেডিয়ামকে প্যারিসের ইনভেলিডস স্টেডিয়ামের মতো করে সাজিয়ে অনুশীলন হয়েছে। যেন চাপের মুখে কিংবা যে কোনও পরিবেশে মানিয়ে নিয়ে ভালো ফল করা যায়। বাংলাদেশেও সাগর ইসলামের জন্য প্যারিসের আবহ কিছুটা তৈরি করেছিলেন ফ্রেডরিক। তবে তা যথেষ্ট নয় বললেন তিনি, ‘ওদের অনুশীলন সুবিধা দেখার মতো। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোরিয়ানরা লেগে থাকে। আর একটা বিষয়, ওদের সহজাত প্রতিভা তো আছেই।  আর্চারি ওদের রক্তে মিশে গেছে। অন্য দেশগুলো ওদের সঙ্গে পেরে উঠছে না। আর আমরা চেষ্টা করছি। ওদের মতো সুবিধাদি পেলে হয়তো একসময় বাংলাদেশও ভালো করতে পারবে। তবে তা অনেক সময়সাপেক্ষ বিষয়।’

আশা নিরাশার মধ্যে জার্মান কোচ এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।