নিজস্ব প্রতিবেদক *
বহুল প্রতীক্ষিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) তত্ত্বাবধানে নির্মিত ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেট উদ্বোধন করেছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (১১জুলাই) বিকালে উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ঐতিহ্যবাহী ফইল্যাতলী বাজারকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আধুনিক কিচেন মার্কেটে রূপান্তর করেছে।
“ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেটের নির্মাণ ও বরাদ্দ নিয়ে এমন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল যে আদৌ এ প্রকল্প আলোর মুখ দেখবে কী না তা নিয়ে নাগরিকদের মনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছিল। পরে আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়ায় আজ এ মার্কেট যাত্রা শুরু করল। এ মার্কেটের কারণে নাগরিকরা যেমন প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে ভাল পণ্য কিনতে পারবেন তেমনি কয়েকশ ব্যবসায়ীর কর্মসংস্থান হল।”
মার্কেটটির ফলে চসিকের রাজস্ব আয় বাড়বে জানিয়ে মেয়র বলেন, চসিকের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে এই আয়বর্ধক প্রকল্পটি ভূমিকা রাখবে। এছাড়া, হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে জনগণের আপত্তি ছিল। আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য ৬টি রিভিউ বোর্ড গঠন করে উক্ত রিভিউ বোর্ডে আমি নিজে উপস্থিত থেকে ৮টি স্থানে গণশুনানির মাধ্যমে করদাতাদের চাহিদা মতে সহনীয় পর্যায়ে কর মূল্যায়ন করি। এতে নগরবাসীর গৃহকর নিয়ে যে অসন্তোষ ছিল তা প্রশমিত হয়েছে। আমার এ উদ্যোগের ফলে জনগণ খুশিমনে গৃহকর দেয়ায় চসিকের রাজস্ব আয় বেড়েছে।
চট্টগ্রামের বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে অবকাঠামো খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, আড়াই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে পুরো শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসণে চলছে দশ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প। এই ব্যাপক বিনিয়োগের ফলে চট্টগ্রাম বৈদেশিক বিনিয়োগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। সামনে ফইল্লাতলীসহ নীচু এলাকাগুলোতে আগের মতো জলাবদ্ধতা মোকাবিলা করতে হবেনা।
১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফইল্যাতলী বাজার দক্ষিণ কাট্টলী ও হালিশহরের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন বাজারের জন্য অপরিহার্য স্থান ছিল। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধা বৃদ্ধি, বাজারের মানোন্নয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এখানে নতুন মার্কেট তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেটের নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় দুই বছর পর, বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ মিউনিসিপাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের অর্থায়নে মিউনিসিপাল গভর্নেন্স এন্ড সার্ভিস প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই মার্কেট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বুঝে নেয়। দোকান বরাদ্দ নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে মেয়রের হস্তক্ষেপে অবশেষে চালু হল এ মার্কেট। মার্কেটটির নীচতলায় ৪৩টিঁ, ২য় তলায় ৬৬টি, ৩য় তলায় ৪৮টি মোট ১৫৭টি দোকান থাকছে। এছাড়া, স্টল থাকছে ১২২টি।
কাউন্সিলর মো. ইসমাইলের সভাপতিত্বে উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. ইলিয়াছ, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, নুরুল আমিন, হুরে আরা বিউটি, স্টেট অফিসার রেজাউল করিম, প্রধান প্রকৌশলী শাহীন-উল-ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা এরশাদুল আমিন, ফয়সাল আমিন, আসলাম সওদাগর। ফইল্যাতলী কিচেন মার্কেট মালিক সমিতির সদস্য সচিব মো. মাসুদ রায়হানের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন মার্কেটের আহবায়ক ওমর ফারুক সওদাগর, নজরুল ইসলাম সোহেল, জহরুল হক বাবুল,মোঃ কফিল ঊদ্দিন, মোঃ হেলাল, মো. নবী।