নিজস্ব প্রতিবেদক *
লঘুচাপের ও লাগাতার বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের নিচু এলাকা ফের ডুবে গেছে । গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি রাতে ঝরে মুষুলধারে; শনিবারও (১৭ আগস্ট) দিনভর থেমে থেমে ঝরে। তবে রবিবার দুপুরে থামলেও রাতে আবারও শুরু হয়; কখনো মুষলধারে আবার কখনো হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ঝরতে থাকে রাতভর। আর তাতেই তলিয়ে গেছে নগরের বিভিন্ন নিচু এলাকা। বহু রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। বহু দোকানপাট ও ব্যবসা বাণিজ্যে এবং বাড়িঘরে ঢুকে পড়েছে পানি। খেটেখাওয়া মানুষদের জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে স্থবিরতা।
আবহাওয়া অফিস বলছে, এ বৃষ্টিপাত আগামী ৪৮ ঘণ্টা টানা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে পরদিন থেকে কিছুটা কমার সম্ভাবনা আছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সোমবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে। এরমধ্যে আজ সোমবার ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগের দিন (১৮ আগস্ট) বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। তার আগে ১৭ আগস্ট বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করে আবহাওয়া অফিস। যদিও রবিবার দিনে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও রাত ১১টার পর মূলত বেশি বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির এ ধারা আজ দিনের বাকি সময় এবং কাল ও পরশু সারাদিন থাকতে পারে। এ সময় থেমে থেমে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্র অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার আভাস রয়েছে।
এদিকে, ভারী বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের স্কুলে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়েন অভিভাবকরা। একইসাথে অফিসগামী যাত্রীরাও পড়েন বিপাকে। নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে গাড়ির সংখ্যাও কম। তার মধ্যে বিভিন্ন দাবিতে ধর্মঘট ডেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতে বাধা দিচ্ছে চালকরা। এতে যানবাহন সংকটে অনেকেই যথাসময়ে গন্তব্যে যেতে পারেননি।
এদিকে, নগরের মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ ও বহদ্দারহাটসহ নিচু এলাকার বেশিরভাগ রাস্তাঘাটে হাঁটু পানি। যাত্রীরা পানি ডিঙিয়েই কোনোভাবে চলাচলের চেষ্টা করছেন। এছাড়াও নগরের জাকির হোসেন রোড ও জিইসিতে জলাবদ্ধতার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে এক জায়গায় অনেকক্ষণ ধরে আটকে আছে যানবাহন।
এ বিষয়ে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা জহিরুল হক বলেন, ‘উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। যে কারণে কমপক্ষে আরও দুইদিন এমন ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে সেই সাথে কোথাও কোথাও পাহাড় ধ্বসেরও সম্ভাবনা রয়েছে।’
উল্লেখ্য, চলতি মাসের শুরু থেকেই বৃষ্টিপাত বেড়েছে চট্টগ্রামে। এর আগে মাসের শুরুতে (১ আগস্ট) টানা বৃষ্টিতে নগরের নিচু এলাকা ডুবে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। সেসময় ১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।
কয়েকদিনের লাগাতোর বৃষ্টিতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায়ও জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।