চট্টগ্রাম নগরবাসীর সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করার জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। শনিবার ট্রিটমেন্ট হসপিটালের পরিচালক ডা. শাহাদাত হোসেনকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নগরীর সাম্পান রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম নগরবাসীর জন্য সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করার জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। স্বাধীনতা পার্ক সিটি কর্পোরেশনের ছিল কিন্তু পরবর্তীতে সেটা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় নিয়ে নিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের ফেরত নেয়ার চেষ্টা করছি এবং আরেকটি পার্ক হচ্ছে স্টেডিয়ামের সামনে যেটা রয়েছে জিয়া শিশু পার্ক সেটাও বর্তমানে ডিফেন্স আর্মিদের হাতে। ডিফেন্স মিনিস্ট্রিতেও কার্যক্রম চলছে সেটাও যাতে আমাদেরকে ফেরে দেয়া হয়। তাহলে এই দুটো পার্ক যদি আমি পেয়ে যাই তাহলে সুন্দর কিছু করে দিতে চেষ্টা করব। আর কিছু দিঘীকে আমি টার্গেট করেছি। ঢেবার পাড়টা দেখবেন নষ্ট হয়ে গেছে, সেখানে দখল হয়ে গেছে। ঢেবার পাড়টা আমি সিডিএ’র সাথে একসাথে কথা বলে আমরা ওয়াকওয়ে করে দিব। আলোকসজ্জার ব্যবস্থা থাকবে যাতে করে রাতেও অনেকে সেখানে ঘুরতে পারে। খুব চমৎকার একটা আশকার দিঘী ছিল সেটা হারিয়ে গেছে। ফার্নিচারের দোকানের কারণে কেউ আশকার দীঘিটা দেখতে পারেনা। সেখানেও ওয়াকওয়ে করে দিব। চমৎকার একটা হাঁটার জায়গা করে দিব। আরেকটি দিঘী রয়েছে ভেলুয়ার দিঘী। এগুলো চিন্তাভাবনার মধ্যে আছে এই দিকগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি যাতে মানুষ বিনোদনের জন্য সুন্দর জায়গা খুঁজে পায়। প্রতিটি সোসাইটির মধ্যে একটি করে পার্ক করার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
“পতেঙ্গা বিচ নিয়ে আমি কাজ করছি। আলোকায়ন করছি। সিকিউরিটির ব্যবস্থা থাকবে, সেখানে হাইওয়ে পুলিশ থাকবে। মেয়েদের জন্য বাথরুমের ব্যবস্থা থাকবে। কারণ এখানে মেয়েরা আসলে খুব অসহায় অবস্থা থাকে অনেক সময় তারা বাথরুম খুঁজে পায় না। তাই টয়লেট ফ্যাসিলিটি আমরা করে দিচ্ছি। বিচের পাড়ে দোকান আছে এগুলোকে আমরা পেছনে নিয়ে আসছি কাজেই আশা করছি ওটা একটা চমৎকার জায়গা হবে ঘুরার জন্য। আমার প্ল্যান হচ্ছে আমি কর্ণফুলি নদীর কল্পলোকের পেছনে একটা পর্যটন সিটি করার। এ বিষয়ে আমি অলরেডি ডিসি মহোদয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছি। জাম্বুরি মাঠটা শিশু পার্কের মধ্যে ছিল। জাম্বুরি মাঠটা আমি উন্মুক্ত করে দেব।”
মেয়র আরো বলেন, এখন রাস্তা মেরামতের কাজ চলছে। আমরা ইতিমধ্যে ম্যাটেরিয়ালস কিনে ফেলেছি যেখানে গর্ত আছে আপনারা শুধু জানাবেন যে রাস্তাতে গর্ত আছে। আমাদের কাছে একটা নোটিশ দিলে হবে যে রাস্তার মধ্যে গর্ত আছে এগুলোর কাজ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে সিআরবি আপনি গিয়ে দেখবেন আগে গর্ত ছিল ক্লিয়ার করেছি।
“চসিকের একটি প্রকল্পের ২৫০০ কোটি টাকার মধ্যে ৫৪২ কোটি টাকার কাজ হয়ে গেছে। গত বছরে তারা দিয়ে ফেলেছে কাজ। আমি শুধু পরীক্ষা করছি ওই ৫৪২ কোটি টাকার যে রাস্তাগুলো দিয়েছে সে কাজগুলো কোয়ালিটেটিভ হয়েছে কিনা। এইজন্য এ প্রকল্পের বিল প্রদান আমি স্থগিত করে রেখেছি। এ প্রকল্পের কাজের বিষয়ে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। আমার কাছে যখন রিপোর্ট আসবে যে যারা কাজ ভালো করেছেন তাদের টাকাগুলো ছেড়ে দেব। আর যারা দুই নাম্বারি করেছেন ওটা আমি আটকে রাখব। এটা যদি আমার কাছে আসে সাথে সাথে আপনারা যে রাস্তাগুলো চাচ্ছেন অনেক রাস্তা হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। অভিযোগের জন্য আমরা একটা হটলাইন খোলার চেষ্টা করছি। আর হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য এবং ট্রেড লাইসেন্স এগুলোর জন্য আমরা অটোমেশনের ব্যবস্থা করছি।

মেয়র বলেন, জনগণের সচেতনতা বাড়াতে হবে। পচনশীল নয় এমন কিছু বস্তু আমরা রাস্তায় ফেলবো না। বিশেষ করে পচনশীল নয় এমন বস্তুগুলো আজকে জলাবদ্ধতার মূল। কাজেই পলিথিনকে হয়তোবা কমপ্লিটলি নিষিদ্ধ করা কঠিন হবে কিন্তু পলিথিন আমরা রাস্তায় অযথা ফেলব না। আমরা প্লাস্টিক ইউজ না করে বিকল্প হিসেবে কাঁচের মগ, জগ ব্যবহার করা যেতে পারে। এ বিষয়গুলো শিশুদের শেখাতে হবে। তাহলে দেখবেন যে শহরটা আসলে অটোমেটিক সুন্দর হয়ে যায়। শহরটা সুন্দর করতে হলে সবারই সাহায্য দরকার।
আরো উপস্থিত ছিলেন ট্রিটমেন্ট হসপিটালের ডা. নুরুল আমিন, ডা. ফজ্লে রাব্বী, প্রফেসর ডা. গোলাম ফারুক, প্রফেসর ডা. বদিউল আলম বাদল, ডা. মো. আবুল কালাম, ডা নেজাম উদ্দিন, ডা. শহীদ উল্লাহ চৌধুরী, ডা. কাজল কান্তি দাশ, ডা. ইয়াহিয়া মানিক, ডা. লিটন দাশ সহ অন্যান্য ডাক্তারবৃন্দ।