[bangla_date] || [english_date]

বিশেষ প্রতিবেদক *

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

১৫ আগস্ট ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ। বাঙ্গালি জাতির অভিভাবক হারানোর দিন। কেঁদেছিল এদিন আকাশ,ফুঁপিয়ে বাতাস। প্রবল কোনো বৃষ্টি নয়,নয় কোনো ঝড়ে। প্রকৃতি কেঁদেছিল কিন্তু মানুষ কাঁদতে পারেনি। ঘাতকদের উদ্ধত সঙ্গিন কাঁদতে দেয়নি কাউকে, গড়ে ওঠতে দেয়নি কোনো প্রতিবাদ, দ্রোহ। ভয়ার্ত বাংলার প্রতিটি বাড়ি থেকে ভেসে এসেছিল চাপা দীর্ঘশ্বাস। কী নিষ্ঠুর, ভয়ঙ্কর ও ভয়াল সেই কালো রাত! বাঙ্গালির সেই তীর্থস্থান ৩২ নম্বর বাড়ি কামান-গোলার আঘাতে কেঁপে ওঠেছিল।পাকিস্তানীরা যাকে খুন করতে সাহস করেনি,অথচ তাঁরই হাতেগড়া সেনাবাহিনীর গুলিতে নির্মমভাবে খুন হলেন বঙ্গবন্ধু মুজিব। রক্তে রঞ্জিত হলো ধানমণ্ডির সেই ঐতিহাসিক বাড়ি। থেমে গেল সকল কোলাহল, মিছিল প্রতিবাদ। ঝাঁঝরা হয়ে গেলো স্বাধীন বাংলার বুক। বাংলার আকাশে নেমে আসে কালো মেঘ। ওল্টোদিকে ঘোরা শুরু হয় ইতিহাস ও প্রগতির চাকা।

শতবছর আগে গর্বিত মা-বাবার কোল আলোকিত করে জন্মেছিলো সেই খোকা। বাবা শেখ লুৎফর রহমান, মা সায়রা খাতুন। কে জানতো টুঙ্গিপাড়ার সেই ডানপীঠে দুষ্ট ছেলেটি বাঙালি জাতিকে উপহার দেবে একটি স্বাধীন মাতৃভূমি, একটি লালসবুজের পতাকা। কে জানতো সেদিন মধূমতির তীরের সেই স্বাধীনচেতা যুবকটি এভাবে একটি ভুখণ্ডের চেহারা আমূল পাল্টে দেবে! এই খোকা-ই হবে বাঙালি জাতির ভ্গ্যানির্ধারক, রাষ্ট্রনায়ক ও জাতির পিতা! খোকার জন্মস্থান টুঙ্গীপাড়া হবে বাংলার অধিকারহারা মানুষের রাজনীতির তীর্থস্থান!

বঙ্গবন্ধু ৫৪বছরের জীবনে ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে প্রায় ১৪বছর (৪হাজার ৬৮২ দিন) ১৮বার কারাভোগ করেছেন। বাংলার মানুষের অধিকার, জনস্বার্থের কথা বলতে যেয়ে মুজিব খেটেছেন জেল বারংবার। জীবনের সকল আরাম-আয়েশ সুখ-শান্তি বিসর্জন দিয়ে সংগ্রাম করেছেন অবিরাম। শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে সকল অন্যায়-অবিচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে, বাংলার মানুষের ন্যায্যকথা উচ্চারণ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন বহুবার। গরীবের খাদ্যের জন্যে ভুখামিছিল করতে যেয়েও দু’বছর পাঁচমাস ভোগ করেছেন কারাবাস। মুজিবের এ অপরিসীম ত্যাগ ও কষ্টের ফসল আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। হাজারবছর ধরে অহেলিত এ জনপদের অনাহারিক্লষ্ট হতভাগ্য মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুণছিলো তাদের মুক্তির গানের আশায়। অসাধারণ সেই সুরের নেশায় বাংলার মুক্তিকামী মানুষ জড়ো হয়েছিলো রেসকোর্স মাঠে। সেই এক চরম উত্তেজনা, ছিল উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা। অবশেষে এলেন মহাকবি, শোনালেন তাঁর মহান কবিতাখানি। “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।” মহাকবির এ কবিতার মন্ত্রে উজ্জীবিত বাঙালি জাতি, সাগররক্ত আর ২লাখ ৬৯ হাজার মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এ জনপদের জাগ্রত জনতা পেয়েছে সেই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।

বঙ্গবন্ধু মুজিব বাংলার মুকুটহীন সম্রাট, মহান এক জননেতা। নেতৃত্বের গুণাবলীতে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়,দেশপ্রেমে ছিলেন পরীক্ষিত। লক্ষ্য অর্জনে ছিলেন অবিচল। চালচলনে আচার-আচারণ,সাংগঠনিক দক্ষতা, সম্মোহনী বাগ্মিতা, মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা, স্বাধীনচেতা, আত্মসম্মানবোধ, উদ্যোগ গ্রহণের সক্ষমতা, সাহস ও আত্মপ্রত্যয়- সবগুণেই ছিলেন গুণান্বিত। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোয়ই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত। অদম্য সাহসিকতায় করেছেন লড়াই অবিসংবাদিত এ নেতা; জনস্বার্থে জীবন করেছেন উৎসর্গ। দমাতে পারেনি কোনো বাধা। শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু তুচ্ছ করে তিনি করেছেন আন্দোলন-মুক্তিসংগ্রাম।

মুজিব শুধু একটি নাম নয়, সমাজবদলের মহান প্রতিকৃতি, স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস। রাজনীতির পালাবদলের কারিগর। মুজিব ছিলেন আন্দোলনের দাবানল, পথহারা মানুষের দিশারী। মুজিবের সুকোমল হৃদয় বিশাল আকাশের মতো উদার। আপাদ-মস্তক তিনি ছিলেন বাঙালি; শোষণহীন সমাজের স্বপ্নচারি। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নেমে আসা বৃষ্টিধারা, ঘনকুয়াশাঢাকা আকাশে সেই কাঙ্ক্ষিত সুর্যের হাসি। সকল প্রকার বৈষম্যের বিপরীতে ছিল তাঁর অনড় অবস্থান। মুজিব ছিলেন মহাপ্রাণ, অমাবশ্যার আকাশে পূর্ণিমার ঝলমলে চাঁদ। মুজিব বাংলা ও বাঙালির গর্ব, অনুসঙ্গ। তিনি ছিলেন, আছেন, থাকবেন; মরেও তিনি অমর। বিশ্ববুকে ঘাতকেরা তাঁকে খতম করে ভীষণ ভুল করেছিলো। মুজিব বিশ্ববাগানের সেরা ফুল, বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য, গৌরব আর অহংকার। তাঁর মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আজন্ম সাধনার ধন ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ মুজিব পরাধীন বাঙালিকে স্বাধীন করে বিশ্বমানচিত্রে দিয়েছে স্থান। ন্যায়নীতির পুজারী, সত্যের সাধক প্রগতির ধারক দেশপ্রেমিক নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিব।

মুজিব বাঙ্গালি জাতির মুক্তিসংগ্রামের এক মহানায়ক,স্বাধীন-বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। জীবনের চেয়ে বাংলার মানুষকে বেশি ভালোবাসতেন বলেই উৎসর্গ করেছিলেন জীবন-যৌবন গণমানুষের কল্যাণে। ধরণীর বুকে চিরঞ্জীব মুজিব বীর-বাঙালির অহঙ্কার,আত্মপরিচয়, একটি পতাকা, একটি মানচিত্র, স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ, অসহায় মানুষের বেঁচে থাকার প্রেরণা। মুজিব মানে ভালোবাসা, অন্ধকারে প্রজ্জ্বলিত আলোকশিখা, দুর্দিনের বিশ্বস্ত কাণ্ডারি, বাংলার নিপীড়িত মানুষের আশা-ভরসার স্থলভিত্তি; মুজিব মানে মুক্তি।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বঙ্গবন্ধু মুজিব নেতৃত্ব ও অনুপ্রেরণায় পথ দেখিয়েছিল দিশেহারা জাতিকে, সাহস যুগিয়েছে জনমনে। হাজার বছরের পরাধীন দারিদ্র্য-শিক্ষাবঞ্চিত বাঙ্গালি তাঁর ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে হয়েছে ঐক্যবদ্ধ। অশ্রু আর রক্তের সাগর সাঁতরে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে তিনি দিয়েছিলেন নজিরবিহীন নেতৃত্ব। তাই তো আমরা বলি, বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু-স্বাধীনতা সবই একইসূত্রে গাঁথা। মুজিব ছিলেন বাঙ্গালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীনতার রূপকার। বাঙ্গালির অধিকার নিয়ে করেননি কখনো আপোস।ফাঁসির মঞ্চেও তিনি গেয়েছেন বাংলা ও বাঙ্গালির জয়গান। বাঙ্গালির মনের মণিকোঠায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে অনন্তকাল। বঙ্গবন্ধু জাতিসত্তার অমর এক বিজয়নিশান। হাজারবছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি; শতাব্দির মহানায়ক। কেউ চাইলেও তাঁর বিশাল এ কীর্তি-অবদান মুছে ফেলতে পারবে না। বাঙ্গালির হৃদয়ে মুজিব হয়ে থাকবে চিরঅম্লান, ইতিহাসের মহানায়ক। মুজিব মৃত্যুঞ্জয় ছায়াবৃক্ষ, দুঃখী মানুষের আপদের বন্ধু, জাতির ঐক্যের প্রতীক,ইতিহাস সৃষ্টিকারী নেতা, তাঁর কাছে চিরঋণী বাংলাদেশ।

শৈশবে মুক্তিযোদ্ধা-বাবার মুখে, গর্ভধারিণী মায়ের গল্পকলায়, অগ্রজ ছাত্রনেতাদের কণ্ঠে শোনা একটি কালজয়ী নাম, চেতনার অগ্নিমশাল, অনুভূতিতে অনুরণন তোলা এক বিশাল হিমালয়- যার যাদুস্পর্শে বাঙালি পেয়েছে স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ। বাঙ্গালির পরম আরাধ্য মহাপুরুষ, বঙ্গবন্ধু মুজিব। তাঁর জীবনের প্রতিটি ক্ষণ, ভাবনায় সক্রিয় ছিল স্বদেশমুক্তির তাড়না- যা জাতিকে দিয়েছে আসল ঠিকানা। যার কণ্ঠস্বর শোনে শিহরিত হয় মানুষ, হয় আবেগে আপ্লুত, জাগরিত হয় শোষণের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয় স্বাধীনতার মন্ত্রে। টুঙ্গিপাড়ার ডানপিঠে সেই খোকার মন্ত্রে মানুষ প্রতিবাদী ও অধিকার সচেতন হয়,ঐক্যবদ্ধ হয় স্বাধীকারের প্রশ্নে। যার ডাকে বাঙ্গালি জাতি ঘোরে দাঁড়ায়, হিসেবে-নিকেশ বোঝে নিতে শেখে, রক্ত দিয়ে ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লালসূর্য। যার অপরিসীম ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাহসী নেতৃতের ক্যারিসমায় আমরা পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌম স্বদেশ,বাংলাদেশ।

চালচলন,আচার-আচরণ,সাংগঠনিক দক্ষতা, সম্মোহনী বাগ্মিতা, মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা, স্বাধীনচেতা, আত্মসম্মানবোধ উদ্যোগ গ্রহণের সক্ষমতা সাহস ও আত্মপ্রত্যয় সবগুণেই ছিলেন গুণান্বিত। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটানোয়ই ছিল জীবনের একমাত্র ব্রত। অদম্য সাহসিকতায় করেছেন লড়াই অবিসংবাদিত এ জননেতা। জনস্বার্থে জীবন করেছেন উৎসর্গ। দমাতে পারেনি কোনো বাধাবিপত্তি। শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু তুচ্ছ করে করেছেন তিনি আন্দোলন মুক্তিসংগ্রাম।

বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠস্বর মানে একটি ইতিহাস,সৃষ্টির প্রসববেদনা। তাঁর আগুনঝরানো জ্বালাময়ী আবেগময় বলিষ্ট কণ্ঠস্বরে ভেসে আসে হাজার বছরের দুঃশাসনের অন্ধকার বিভিষীকাময় ইতিহাস, অধিকারহারা মানুষের বোবাকান্না আর কারাগারের যাপিত দিনের কথা। যে বজ্রকণ্ঠের অপার মহিমায়, ঐতিহাসিক উদাত্ত আহবানে অধিকার ও স্বাধীনতাবঞ্চিত নিপীড়িত মানুষের মনে জেগে ওঠে সাহসের সুপ্তকণিকা, ধারণ করে দিকনির্দেশনা। যে বজ্রকণ্ঠে তৈরি হয় ঐতিহাসিক অমর কবিতা, খোঁজে পায় মানুষ তাতে জীবনের আসল বারতা। দীর্ঘদিন প্রতিক্ষাশেষে অবশেষে বাঙালি ফিরে পায় স্বপ্নের স্বাধীনতা।

মুজিব শুধু একটি নাম নয়, সমাজবদলের মহান প্রতিকৃতি, অন্ধকারে আলোর মশাল। মুজিব একটি মহাসংগ্রামের ইতিহাস, রাজনীতির পালাবদলের কারিগর। মুজিব আন্দোলনের দাবানল, পথহারা মানুষের দিশারী। মুজিবের সুকোমল হৃদয় বিশাল আকাশের মতো উদার। মুজিব আপাদ-মস্তক বাঙালি, শোষণহীন সমাজের স্বপ্নচারি। মুজিব দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নেমে আসা বৃষ্টিধারা, ঘনকুয়াশাঢাকা আকাশে সেই কাঙ্ক্ষিত সূর্যের হাসি। সকল প্রকার বৈষম্যের বিপরীতে ছিল তাঁর অনড় অবস্থান। মুজিব মহাপ্রাণ, অমাবশ্যার আকাশে পূর্ণিমার ঝলমলে চাঁদ। মুজিব বাংলা ও বাঙালির গর্ব, অনুসঙ্গ। মুজিব ছিলো আছো, থাকবেই। মরেও অমর মুজিব বিশ্ববুকে। ঘাতকেরা তাঁকে খতম করে করেছিলো ভীষণ ভুল। মুজিব বিশ্ববাগানের সেরা ফুল। বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য, গৌরব  ও অহংকার। বাঙালির তাঁর জন্যে পেয়েছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আজন্ম সাধনার ধন, ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ মুজিব পরাধীন বাঙালিকে স্বাধীন করে সবার ওপরে দিয়েছো স্থান। মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক স্বাধীন-বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জীবনের চেয়ে বাংলার মানুষকে বেশি ভালোবাসেন বলেই উৎসর্গ করেছিলেন জীবন-যৌবন গণমানুষের কল্যাণে।ধরণীর বুকে চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু মুজিব বীর-বাঙালির আত্মপরিচয়, একটি পতাকা, একটি মানচিত্র ও স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ। মুজিব মানে। অন্ধকারে প্রজ্জ্বলিত আলোকশিখা, দুর্দিনের বিশ্বস্ত কাণ্ডারি। বাংলার নিপীড়িত মানুষের আশা-ভরসার স্থল,মুজিব মানে মুক্তি।

মুজিব দুর্দমনীয় নেতৃত্ব ও প্রেরণায় পথ দেখিয়েছিল দিশেহারা জাতিকে। সাহস যুগিয়েছে জনমনে, হাজারর বছরের পরাধীন দারিদ্র্য-শিক্ষাবঞ্চিত বাঙ্গালি মুজিবের ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে হয়েছে অনুপ্রাণিত। অশ্রু আর রক্তের সাগর সাঁতরে ছিনিয়ে এনেছে স্বাধীনতা। তাই তো আমরা বলি, বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু-স্বাধীনতা সবই একইসূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধু মুজিব ছিলেন বাঙ্গালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, ছিলেন স্বাধীনতার রূপকার। বাঙ্গালির অধিকার নিয়ে করেননি কখনো আপোস। ফাঁসির মঞ্চেও তিনি গেয়েছেন বাংলা ও বাঙ্গালির জয়গান। বাঙ্গালির মনের মণিকোঠায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে মুজিব অনন্তকাল।

বঙ্গবন্ধু জাতিসত্তার অমর এক বিজয়নিশান। হাজারবছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, শতাব্দির মহানায়ক। কেউ চাইলেও তাঁর বিশাল এ কীর্তি-অবদান পারবে না মুছে ফেলতে। বাঙ্গালির হৃদয়ে মুজিব হয়ে থাকবে চিরঅম্লান ও ইতিহাসের মহানায়ক হয়ে। মুজিব মৃত্যুঞ্জয়, ছায়াবৃক্ষ দুঃখী মানুষের আপদের বন্ধু, জাতির ঐক্যের প্রতীক ও ইতিহাস সৃষ্টিকারী নেতা। তাঁর কাছে চিরঋণী বাংলাদেশ।

বাংলার আকাশে বাতাসে, গঙ্গা থেকে বুড়িগঙ্গা, পরাধীন জনতার মিছিলে, গণমানুষের নিঃশ্বাসে-বিশ্বাসে ঠাঁই করে নিয়েছে এ ভালোবাসার নামটি। এ জনপদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মুজিব মিশে আছেন আষ্টেপিষ্টে। তিনি ছিলেন আমজনতার আসল ঠিকানা, আন্দোলনের মূল প্রেরণা ,মানবাধিকারের প্রতিভু, স্বাধীকার ও স্বাধীনতার স্বপ্নবাজ, গরীব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের অকৃত্রিম বন্ধু, আশাজাগানিয়া কণ্ঠস্বর, অগ্রজ চিন্তার মহান নেতা। জীবনের প্রতিটি বসন্ত বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে, অসীম দুঃসাহসী সেই অবতার বাঙালির বন্ধু, বাংলার বন্ধু- শেখ মুজিব।

জাতির জনক মুজিব স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রীর। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করলেন মনেপ্রাণে। প্রশাসনিকব্যবস্থার পুনর্গঠন, সংবিধান প্রণয়ন,যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষাব্যবস্থার সম্প্রসারণ, পরিত্যক্ত ব্যাংক-বীমাশিল্পের জাতীয়করণ আরও নানান পদক্ষেপ। দুর্নীতিবিরোধী শক্ত অবস্থানসহ নিলেন বিভিন্ন উদ্যোগ। ক্ষেপে গেলো স্বাধীনতাবিরোধী সুবিধাবাদী চক্র। কলংকিত হলো মধ্যরাত পনেরো আগস্ট; চিরতরে হারিয়ে গেলেন মুজিব সপরিবারে।

এক মুজিব লোকান্তরে, কোটি মুজিব  বাংলার ঘরে ঘরে। স্বাধীন-বাংলাদেশের অস্তিত্বে মুজিব নামটি মিশে আছে। সাগরের ঢেউ,নদীর জোয়ারভাটা কোকিলের গান বাঁশির সুরে শোনা যায় শেখ মুজিবের রব। একুশের বইমেলায়, ডিসেম্বরের বিজয়মেলায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, লালদিঘির জনসভায় সকলের মুখে একটি নাম শেখ মুজিবুর রহমান। মুজিব মরেও অমর,অক্ষয়, অবিনশ্বর। মৃত্যুকে জয় করে পদ্মা-মেঘনা-যমুনা কর্ণফুলীর ঢেউয়ে ভেসে বেড়ায় একটি আওয়াজ, একটি জয়ধ্বনী, সাহসের প্রতিধ্বনী প্রতিবাদ, হিমালয়ের মূর্তপ্রতীক-সেই মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব।

পরিশেষে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধু মুজিব বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে মিশে আছেন। বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানে বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু কোনো দলের নন, তিনি জাতির পিতা। জাতির পিতাকে নিয়ে কোনো কটুক্তি, অশালীন ও অসম্মানজনক মন্তব্য করা সভ্যতা ও ভব্যতার পর্যায়ে পড়ে না। রাজনৈতিক নীতি-আদর্শ ভিন্ন হলেও জাতির পিতাকে নিয়ে কারো কোনো বিরূপ মন্তব্য করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়। দেশপ্রেমিক কোনো সচেতন সুনাগরিক কখনো জাতির পিতাকে অশ্রদ্ধা ও অসম্মান করতে পারে না। ন্যূনতম জাতীয়তা ও দেশাত্ববোধ থাকলে জাতির জনককে নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ৫আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ধ্বংসের যে অভাবনীয়, অপ্রত্যাশিত ও ন্যাক্কারজনক তাণ্ডবলীলা চলেছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। একটি সভ্য দেশে এটি কল্পনাও করা যায় না। বাবার অপরাধের জন্যে পুত্র-কন্যাকে,পুত্র-কন্যার অপরাধের জন্যে বাবাকে দায়ী করা কোনো আইনে নেই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি অন্যায় করে থাকেন, তার জন্যে তো তাঁর বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে দায়ী করা যায় না।

আমি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের কালোরাতে বঙ্গবন্ধু মুজিবসহ যারা শাহাদতবরণ করেন তাঁদের পরমাত্মার প্রশান্তি কামনা করছি।