[bangla_date] || [english_date]

নিজস্ব প্রতিবেদক *

প্রয়াত অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক

একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, ভাষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন। তিনি দীর্ঘদিন হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন।

বুধবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মরদেহ রাজধানীর ভাটারার বাসায়  নেয়া হয়। এরপর জানাজা শেষে নেয়া হবে চট্টগ্রামে। সেখানেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

ড. মাহবুবুল হক প্রবন্ধে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া গবেষণায় অবদান রাখায় ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন।

ড. মাহবুবুল হক ১৯৪৮ সালের ৩ নভেম্বর ফরিদপুরের মধুখালিতে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর বেড়ে ওঠেন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান), ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং ১৯৯৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে যোগদান করেন।

তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে: বাংলা বানানের নিয়ম, রবীন্দ্র সাহিত্য রবীন্দ্র ভাবনা, ইতিহাস ও সাহিত্য, সংস্কৃতি ও লোক সংস্কৃতি এবং বাংলার লোক সাহিত্য: সমাজ ও সংস্কৃতি প্রভৃতি।

ভাষাবিজ্ঞানী মাহবুবুল হকের মৃত্যুতে উদীচীর  শোক প্রকাশ

বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠক,ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. চন্দন দাশ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শীলা দাশগুপ্ত।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য পাঠানো শোকবার্তায় দেশ, জাতি ও সমাজের প্রতি প্রয়াত মাহবুবুল হকের কর্মমুখর অবদানের জন্য উদীচীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।

উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. চন্দন দাশ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শীলা দাশগুপ্ত শোকবার্তায় বলেন, অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে নিরলস ভূমিকা রেখেছেন। একসময় তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, চট্টগ্রাম জেলার সম্পাদকমন্ডলীর একজন সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি উদীচী চট্টগ্রাম জেলার একজন নিবেদিতপ্রাণ সদস্য হিসেবে একসময় দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবে দীর্ঘসময় ধরে দেশের সকল গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের একজন নিরলস যোদ্ধা ছিলেন।

শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা এবং গবেষণায় অনবদ্য তিনি ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলা ভাষার গবেষণা তাঁকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি দিয়েছে। এদেশে শুদ্ধ সংস্কৃতির চর্চা এবং প্রগতিশীল সংস্কৃতির সংগ্রামের ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। মাহবুবুল হকের মৃত্যুতে উদীচী পরিবার শোকাহত। তাঁর মৃত্যুতে দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনে যে ক্ষতি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়।