[bangla_date] || [english_date]

ক্রীড়া প্রতিবেদক *

চলতি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে স্পেন যেন এক অপ্রতিরোধ্য দল। কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে জয় পেতে কষ্ট হলেও অন্যান্য ম্যাচগুলোতে দাপটের সঙ্গেই বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে ২০০৮ ও ২০১২ সালের চ্যাম্পিয়নরা। আজ প্রথম সেমিফাইনালে ফ্রান্সকে হারাতেও বেশি কষ্ট হলো না স্পেনের। মিউনিখে কিলিয়ান এমবাপেদের ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরোর ফাইনালে চলে গেছে গত আসরের সেমিফাইলিস্টরা।

অন্যদিকে ফ্রান্সের জার্সিতে বিশ্বকাপ জিতলেও এখনো ইউরো কাপ জেতা হয়নি এমবাপের। এবার মহাদেশীয় শিরোপা জয়ের দারুণ স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদমুখী এই তারকা। আসরের প্রথম ম্যাচে নাক ভেঙে গেলে পরের ম্যাচগুলোতে মাস্ক পরে খেলতে নেমে বিরক্ত হয়েছিলেন এমবাপে। তবে আজ মাস্ক ছাড়া নামলেও গোলের সঙ্গে হয়নি তার। কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনার কাছে হারের পর এবার আরও ব্যর্থ মিশন শেষ করলো

সর্বশেষ ২০০০ সালে ইউরো কাপ জিতেছিল ফ্রান্স। এরপর ২৪ বছর পেরিয়ে গেলেও শিরোপার সঙ্গে দেখা হয়নি ফরাসিদের। ২০১৬ সালে ফাইনালে গেলেও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের কাছে ১-০ গোলে হেরে শিরোপাবঞ্চিত হয়েছিল ফ্রান্স।

মিউনিখে আজ দারুণ শুরু করেছিল ফ্রান্স। মাত্র ৮ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে গিয়েছিলো তারা। এমবাপের ক্রস থেকে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন রান্ডাল কুলো মুয়ানি। এতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। চলতি ইউরোতে এই প্রথম প্রথমার্ধে গোলের দেখা পেল ফরাসিরা।

স্পেন যে এবারের ইউরোতে দুর্দান্ত, সেটি প্রমাণ করতে সময় নেয়নি বেশি। ২১ মিনিটে লামিন ইয়ামালের চোখ ধাঁধানো গোলে সমতায় ফেরে স্পেন। আলভারো মোরাতার অ্যাসিস্ট থেকে বাঁপায়ের দারুণ শটে ফরাসিদের জালে কম্পন ধরিয়ে দেন ১৬ বছর বয়সী এই কিশোর।

অল্প সময়ের মধ্যে সমতায় ফিরেও গোলক্ষুধা একটুও কমেনি স্পেনের। ৪ মিনিট পরই আবার গোল করে স্প্যানিশরা। দানি ওলমোর গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় লুইস ডি লা ফুয়েন্তের দল। ডি-বক্সের মাঝখান থেকে দুই ফরাসি ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে শট নিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন স্প্যানিশ এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ও উইঙ্গার।

এর আরও কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করে দুই দল। গোল পায়নি কেউ। অবশেষে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় স্পেন।

দ্বিতীয়ার্ধে প্রতিযোগিতা আরও কঠিন হতে শুরু করে। দুই দলই তাদের আক্রমণের ধার বাড়ায়। তবে আক্রমণ বেশি এসেছে ফরাসিদের পা থেকেই। ৫৩ মিনিটে ওসুমানে ডেম্বেলের ক্রস থেকে দারুণ হেড নিয়েছিলেন অরেলিয়েন চুয়োমেনি। তবে স্পেনের গোলরক্ষক উনাই সিমন তার শট সেভ দেন।

৩ মিনিট পর আক্রমণে আসেন এমবাপে। এবার আন্দ্রিয়েন রাবিয়তের অ্যাসিস্ট থেকে এমবাপের করা শটটি ব্যর্থ করেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক। ৬৩ মিনিটে আবার গোলের সুযোগ তৈরি করে ফ্রান্স। এবার ৬ গজের বক্সের ভেতর থেকে দায়ত উপামেকানোর করা হেড গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। তাকে কর্নার আসা বল নিয়ে ক্রস দিয়েছিলেন ডেম্বেলে।

৮৫ মিনিটে বল নিয়ে দুরন্ত গতিতে এমবাপে এগিয়ে এসে বল মেরে গোলবারের অনেকটা উপর দিয়ে। ৮৯ মিনিটে একটি আক্রমণ করে স্পেন। তবে ফরাসি ডিফেন্ডাররা সেটি ব্লক করে দিতে সমর্থ হন।

এরপর স্পেনের লক্ষ্য ছিল রক্ষনাত্মক ভঙ্গিতে খেলে ম্যাচটি শেষ করা। কোনোভাবেই গোল হজম করা যাবে না। স্পেন নিচে নেমে খেলার কারণে আক্রমণের সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্স। শেষ মুহূর্তে আন্টোনিও গ্রিজম্যানের একটি হেড গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। তবে কিছুক্ষণ পরই শেষবারের মতো বাঁশি বাজান রেফারি। এতে ফাইনালে যাওয়ার আনন্দ উদযাপন করতে শুরু করে স্প্যানিশরা।