[bangla_date] || [english_date]

নিজস্ব প্রতিবেদক *

লায়ন  মো. আসলাম চৌধুরী

দীর্ঘ  ৮ বছরের  বেশি কারাবাসের পর আজ (২০ আগস্ট) সীতাকুণ্ডে আসছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব জননেতা লায়ন আসলাম চৌধুরী এফসিএ। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে তাঁর জামিনপ্রাপ্তির পথ সুগম হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ৭৬টি নাশকতা, বিস্ফোরক, বিশেষ ক্ষমতা, দুর্নীতি,রাষ্ট্রদ্রোহ ও চেকের মামলা ছিল। সব মামলায় তিনি এখন জামিনে আছেন।

সোমবার (১৯ আগস্ট) রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্টের দেয়া তাঁর জামিন বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। এর ফলে মুক্তিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর  আইনজীবীরা। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আসলাম চৌধুরীর জামিন দীর্ঘদিন যাবত স্থগিত ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে ২০১৬ সালের প্রথমদিকে ভারতে বসে ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সাথে বৈঠক করার অভিযোগ উঠে আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে। দেশজুড়ে বিষয়টি আলোচনায় আসার পর ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।  তবে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিন চেম্বার জজ স্থগিত করার কারণে এতদিন মুক্তি পাননি তিনি।

কারামুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম জেলগেটে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা লায়ন আসলাম চৌধুরী এফসিএ।

প্রাণপ্রিয় নেতার কারামুক্তিবার্তা পেয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ-উল্লাসের ঢেউ লেগেছে। কারামুক্ত নেতাকে অভিনন্দন জানিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা  ব্যানার আপলোড করেন ফেসবুকে। সীতাকুণ্ড উপজেলার দারোগাহাট থেকে ফৌজদারহাট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশের বিভিন্ন স্থানে সাঁটানো হয় ব্যানার-ফেস্টুন। অগণিত দলীয় অনুসারী ও শুভানুধ্যায়ীরা  নেতার আগমনের জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। দলের বাইরেও সর্বমহলে রয়েছে তাঁর ঈর্ষণীয় গ্রহণযোগ্যতা।  অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে , তাঁকে একনজর দেখার জন্যে মহাসড়কের দুপাশে আজ বিপুলসংখ্যক মানুষ ভিড় করবেন।

দানবীর,পরোপকারী, মেধাবী এ জনপ্রিয় নেতা জেলখানায়ও কারাবন্দি বিএনপির নেতাকর্মী ও দল-মত নির্বিশেষে সকলকে তিনি সাধ্যমতো আর্থিক ও আইনি সহযোগিতা করেছেন। সর্শেষ ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সারা দেশের কারাগাগুলোতে সমস্যা তৈরি হলেও চট্টগ্রাম কারাগারে আসলাম চৌধুরীর কারণে কোনো হামলা হয়নি। কারা কর্তৃপক্ষ আসলাম চৌধুরীর সহযোগিতা চাইলে তিনি উত্তেজিত জনতাকে কারাগারে হামলা না চালাতে ভূমিকা রাখেন। তাঁর সহযোগিতা না পেলে চট্টগ্রাম কারাগার বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে বলে কারা কর্তৃপক্ষ গণমাধ্যমকে জানায়।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক কাজী সালাউদ্দিন তাঁর ফেসবুকওয়ালে লিখেছেন,“রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার হয়ে দীর্ঘ প্রায় নয়বছর কারারুদ্ধ থাকার পর অবশেষে বীরচট্টলার সূর‌্যসন্তান, তৃণমূলের হৃদয়স্পন্দন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, জননেতা আসলাম চৌধুরী আজ (২০ আগস্ট) সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম কারাগার থেকে বের হবেন। অতঃপর  তিনি সড়কপথে সীতাকুণ্ড উপজেলার সর্বশেষ বড়দারোগাহাট পর্যন্ত গিয়ে ফেরার পথে সীতাকুণ্ড পৌরসভাসদরে পথসভায় বক্তব্য রাখবেন। সভাশেষে তিনি  ফৌজদারহাটে মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের কবর জেয়ারত শেষে নিজবাড়িতে ঢুকবেন। এছাড়া তিনি সমগ্র চট্টগ্রামের সর্স্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকসহ সকলকে সকাল ৯টায় জেলগেটে অবস্থানের আহনান জানান এবং সীতাকুণ্ড উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের স্ব স্ব এলাকায় লায়ন আসলাম চৌধুরীকে বরণ করার জন্যে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করেন।

গতকাল (১৯ আগস্ট) রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া তাঁর জামিন বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। এর ফলে তার মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী  নাছিমা আক্তার চৌধুরী।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছিলেন।