[bangla_date] || [english_date]

চবি প্রতিনিধি *

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দুই দফায় হামলা চালিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় দুইজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে সোমবার (১৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার ও কাটাপাহাড় সড়কে ।

এর আগে দুপুর আড়াইটার শহরগামী শাটলট্রেন থেকে চবি সমন্বয়ক রাফিকে জোরপূর্বক ছাত্রলীগ তুলে নিয়ে গেছে প্রক্টর অফিসে।এসময় রাফির ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য প্রক্টরের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায় ছাত্রলীগের অনুসারীদের।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দাবি, তালাত মাহমুদ রাফি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এরপরও যেহেতু সে কোটা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে, তাই তার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার নেই।

এসময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিভিন্ন শ্লোগান দেন-সারা বাংলায় শেখ হাসিনা, প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা, দেশরত্ন শেখ হাসিনা, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ভয় নাই রাজপথ ছাড়ি নাই, ও-ই হই রই রই জামায়াত শিবির গেলি কই,আমার সোনার বাংলায় রাজকারদের ঠাই নাই, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারদের ঠাই নাই,তুমি কে, আমি কে, বাঙালি বাঙালি, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা, মেঘনা, যমুনা।

চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ প্রতীম বড়ুয়া বলেন, তালাত মাহমুদ রাফি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। এরপরও যেহেতু সে কোটা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে, তাই তার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অধিকার নেই।তিনি চবি প্রক্টরের কাছে রাফির ভর্তি বাতিলের দাবি জানান। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জামায়াত শিবির আমরা দমন করেছি। গতকাল রাজাকার, রাজাকার সম্বোধন করে কিভাবে সম্ভব এই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গার মধ্যে নিজেকে রাজাকার দাবি করতে পারে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক রাফিক বলেন, আজকের কর্মসূচি ৩টা ৩০ মিনিটে ষোলশহরে। সেখানে যাওয়ার জন্য আমি ট্রেনে উঠি তারপর আমাকে শাটল থেকে নামানো হয়। আমার গায়েও হাত তোলা হয়, অনেকেই উত্তেজিত অবস্থায় মারমুখী ছিল।আপনারা সবাই দেখেছেন। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে যেনো আমি শাটল থেকে নেমে আসি। আমি বাঙালি এতে কোন সন্দেহ নেই। আমাদের আন্দোলন যোগদান করার কথা ছিল আমরা যেতে পারিনি। আমাদের গতকাল রাতে যে শ্লোগান দিয়েছিলাম এটা একটা আইরনি, এটা একটা প্রতিবাদের ভাষা। হাজার হাজার স্টুডেন্ট আন্দোলন করতেছে তারা তো রাজাকার না। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবীর জন্য নেমেছি, অধিকারের জন্য নেমেছি।

প্রসঙ্গত,১৫ জুলাই রাত ১১ টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) মাঝরাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর ক্যাম্পাসের কাটাপাহাড় রোডে পেছন থেকে অতর্কিত ককটেল হামলা করে ছাত্রলীগ। এতে দুজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাতে ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্টে সমবেত হন। এসময় তারা ‘তুমি কে আমি কে- রাজাকার, রাজাকার’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

অভিযোগ উঠেছে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবর প্রকাশ হলে বিভিন্ন হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। এসময় সুমন নামের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সুমন চবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী।

হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে আন্দোলনকারী একদল শিক্ষার্থী বলেন, “আন্দোলনরত অবস্থায় পেছন থেকে ছাত্রলীগ কর্মীরা লাঠি সহ ধাওয়া করে এবং ককটেল নিক্ষেপ করে।

চবি প্রক্টর অহিদুল আলম বলেন, আন্দোলনকারীরা যদি আদালতের রায় না মানে, তাহলে তাদের বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা আদালতে বাইরে যেতে পারবো না। আর আহত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।