[bangla_date] || [english_date]

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি *

সীতাকুণ্ডে ঋণের কিস্তির টাকা জোগাড় করতে না পেরে এক নারী আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার (১৫জুলাই) সকালে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মধ্যম মাহমুদাবাদ (বাহারিয়া বাড়ি) এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত নারীর নাম পুতুল বেগম (৫০)। তিনি একই এলাকার জহিরুল ইসলামের স্ত্রী।

ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, প্রত্যাশা, জনসেবাসহ বেশ কয়েকটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন পুতুল। আজ সকালে গ্রামীণ ব্যাংক ও আশা ব্যাংকের কিস্তি দেয়ার কথা ছিল। গতকাল রবিবার রাতে কিস্তির টাকা নিয়ে তাঁর বড় ছেলে আব্দুল আলীমের সঙ্গে কথা-কাটাকাটিও হয় তাঁর। ছেলে কিস্তির টাকা না দিয়ে মায়ের সঙ্গে রাগারাগি করে বাড়ি ছেড়ে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে পুলিশ জানান, আজ সকালে ঘরের দরজা খোলা দেখে তাঁর ছোট ছেলে আব্দুল আজিজ সায়েম মায়ের ঘরে প্রবেশ করেন। মায়ের ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের ছোট ভাই আশিক জানান, উত্তরবঙ্গের প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর বোনের বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর দুই ছেলেসহ তাঁর বোনকে তাঁদের বাড়িতে রেখে বোনজামাই পালিয়ে যান। এর পর থেকে ছেলেদের নিয়ে তাঁদের বাড়িতে বাস করছিলেন বোন। তিনি ছেলেদের ও সংসার খরচের জন্য বেশ কয়েকটি এনজিও সংস্থা থেকে লোন নিয়েছিলেন। আজ দুটি এনজিও সংস্থার কিস্তির টাকা দেয়ার তারিখ ছিল। কিস্তির টাকা নিয়ে রাতে ভাগনে আব্দুল আজিজের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়েছিল বোনের।

আশিক আরও বলেন, ‘কিস্তির টাকা পরিশোধ নিয়ে আমার বোন খুব মানসিক যন্ত্রণায় ছিলেন। আজ সোমবার সকালে টাকা নিতে কিস্তির লোক আসার কথা ছিল। আর টাকা দিতে না পারলে তাদের কাছে অপমানিত হতে হবে। তাই কিস্তি পরিশোধের চাপ থেকে রেহাই পেতে আমার বোন আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে বলে ধারণা করছি।’

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন জানান, ওই নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের অনুরোধে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।