[bangla_date] || [english_date]

প্রতিবেদক *

চুক্তি অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম ও বিডিবিএলের এমডি হাবিবুর রহমান গাজী।

অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা আর খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে (বিডিবিএল) একীভূত করছে রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক। পদ্মা-এক্সিমের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে চুক্তি করেছে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক দুটি।

প্রথমে অস্বীকৃতি জানালেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে একীভূত হওয়ার সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) সই করেছে বিডিবিএল।

দুই ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদই মার্জারের সিদ্ধান্ত অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (১২ মে) একীভূতের প্রাথমিক চুক্তি সম্পন্ন করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে চুক্তিতে সই করেন সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করিম ও বিডিবিএলের এমডি হাবিবুর রহমান গাজী। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাছের, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী, বিডিবিএলের চেয়ারম্যান শামীমা নার্গিসসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি সই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খেলাপি ঋণ আদায় করতে না পেরে সোনালী ব্যাংকের সাথে একীভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিডিবিএল চেয়ারম্যান শামীমা নার্গিস। বিডিবিএল চেয়ারম্যান বলেন- ‘বিডিবিএল এর ৪টি ইনডিকেটরের মধ্যে ৩টিই ভালো আছে শুধু একটিতে একটু দুর্বল অবস্থায় আছে, খেলাপি ঋণ। আগে যেটা ৪১ শতাংশ ছিল, আমরা সেটা কমিয়ে ৩৪ শতাংশে নিয়ে এসেছি। মার্জারের যে নীতিমালা আছে ৪টি ইন্ডিকেটরের মধ্যে খেলাপি ঋণের বিষয়টা আলাদা গুরুত্বপূর্ণ।

আপনারা জানেন এক বছরে আমি ৪১ থেকে ৩৪ শতাংশে এসেছি। ছয় মাসে ৩৪ থেকে ৫-১০ বা ১৫তে আসা সম্ভব না। খেলাপি ঋণ শুধুই আমার একটিভনেস না, যার যে খেলাপি তাকেও এগিয়ে আসতে হবে। সে যদি এগিয়ে না আসে তার জামানত বিক্রি করতে হলেও আমাকে অনেকগুলো ধাপ অর্থঋণ আদালত, অর্থ আদালত, মামলা এসব ধাপ অতিক্রম করে আসতে হবে। যেটা কোনোভাবেই ছয় মাসে সম্ভব না।

বিডিবিএল সময় নিতে পারত তারপরও কেন মার্জারে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাইভেট ব্যাংকগুলো যেমন গ্যারান্টি দিচ্ছে, আগামী এক বছরে এত হাজার কোটি টাকা আনব আমি সেই গ্যারান্টি দিতে পারছি না। কারণ আমাদের ব্রাঞ্চের সংখ্যা কম। মাত্র ৫০ টি। কাজেই আমি যে সময় নিব বাংলাদেশ ব্যাংক তো আর আমাকে ৫-১০ বছর সময় দিবে না।

বিডিবিএলর কর্মীরা মার্জারে না যেতে খোলা চিঠির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিডিবিএল চেয়ারম্যান বলেন, এখানে দুই ব্যাংকের পর্ষদ মিলে একীভূতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কাজেই তারা অনেক কিছু প্লাস মাইনাস করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।  যেটা বেটার হয় সেটা করা হয়েছে।

এসময় সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকী  বলেন, আমরা অনেক চিন্তা ভাবনা করেই মার্জারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা কোনো চাপের মুখে নয়, নিজেরাই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের দুই ব্যাংকের দুই ধরনের অভিজ্ঞতা আছে। সেগুলা কাজে লাগিয়ে আমরা এগিয়ে যাব। আজকে বিডিবিএলের চেয়ারম্যানও ছিলেন এখানে, তার কিছু প্রশ্ন ছিল। গভর্নর সেগুলোর সন্তোষজনক জবাব দিয়েছেন।

সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আফজাল করিম বলেন- ‘সোনালী ব্যাংকের এই মুহুর্তে ১ লাখ পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে বিডিবিএলের ৩২০০ কোটি টাকা। যা প্রায় ৫০ ভাগের এক ভাগ। একই অবস্থা লোনের ক্ষেত্রেও। কাজেই এটা সোনালী ব্যাংকে খুব বেশি ইফেক্ট পড়বে না। আর বিডিবিএল এর এমপ্লয়িদের শঙ্কা বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নাই। আমাদের প্রয় ৮ হাজার কর্মী আছে তারপরও অনেক লোকবল শর্ট আছে, আর বিডিবিএলের ৬০০ মতো কর্মী আছে, সুতরাং তাদের শঙ্কার কিছু নেই।