[bangla_date] || [english_date]

নিজস্ব প্রতিবেদক *

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে ‘জনদুর্ভোগ তৈরি না করে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে আসা ও কোটার যৌক্তিক সমাধান’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ছাত্রলীগের নেতারা।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, কোটার যৌক্তিক সংস্কার ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধান ছাত্রলীগও চায়। এছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে যে কোনো সমস্যার সমাধানে বিশ্বাসী ছাত্রলীগ।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, প্রশাসনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিষয়টি বিচ্ছিন্ন কোনো আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সুরাহা সুচিন্তিত নয় বলে আমরা মনে করি। কন্সট্রাকটিভ পলিসির অ্যাডভোকেসির মাধ্যমে এটি সমাধান করা সম্ভব।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালের সরকারের পরিপত্র আদালতের রায়ে এখনও বহাল। আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের পথকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা ঠিক হবে না। আন্দোলনকে টেনেহেঁচড়ে এভাবে দীর্ঘায়িত করা উচিত নয়।

এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বানও জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, আমরা আশা করি বাস্তবতার নিরিখে আদালত পর্যবেক্ষণ দেবেন এবং নির্বাহী বিভাগ ব্যবস্থা নেবে, সেজন্য ধৈর্য্য ধরতে হবে। মেধা এবং কোটা বিপরীত শব্দ নয়। যারা চাকরি পাচ্ছে তারা মেধাবী যারা চাকরি পাচ্ছে না তারাও মেধাবী। প্রিলি, লিখিত এবং ভাইবা পরীক্ষার পরে কিন্তু কোটা প্রয়োগ করা হয়। সুতরাং যারা কোটা পর্যন্ত যেতে পারেন তারা সকলেই মেধাবী।

তারা বলেন, আমরা অবশ্যই মেধাভিত্তিক কর্মসংস্থান চাই এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি চাই। আমরা শঙ্কার সাথে লক্ষ্য করছি এই আন্দোলনকে প্রলম্বিত করে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।

ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, যে বিএনপি জামাত তরুণ প্রজন্মের শত্রু তারা এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছে। অথচ তারাই পিএসসিকে হাওয়া ভবনে নিয়ে ভাইয়া ক্যাডার চালু করেছিলো। যারা রাজনৈতিক দূরাভিসন্ধি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করবে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ অবস্থান নেবে। যারা এখন আন্দোলন করছে তারা চাকরিজীবী নয় তারা আন্দোলনজীবী, আন্দোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে।

বিকল্প আবাসন ছাড়া হরিজন উচ্ছেদ নয়: হাইকোর্টবিকল্প আবাসন ছাড়া হরিজন উচ্ছেদ নয়: হাইকোর্ট

শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে তাদের ধৈর্য্য ধরে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, যারা এই আন্দোলনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রস্তুত আছি

এসময় সড়ক অবরোধের মত কর্মসূচী থেকে বিরত থাকতে আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানায় ছাত্রলীগ।

যে কোনো বিষয়ে আন্দোলন করা যায়; কিন্তু মানুষকে জিম্মি করে দাবি আদায় যৌক্তিক না জানিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘নিজেদের দাবি আদায়ে আন্দোলনকারীরা সাধারণ মানুষের দিকে তাকাচ্ছেন না। কোনো অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে এটার সমাধান সম্ভব নয় বলেই ছাত্রলীগ মনে করে। তাই এখানে তাড়াহুড়ো নয়, চাপ প্রয়োগ নয়। আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে যারা আন্দোলনের উস্কানি দিচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের প্রশ্ন থেকেই যায়।

‘আন্দোলনকারীদের এটাও মনে রাখা দরকার, দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। জনগণকে জিম্মি করা আন্দোলন-অবরোধে রায়কে প্রভাবিত করা যাবে না বলেই মনে করে ছাত্রলীগ। যারা আন্দোলন করছেন, আপনারা অপেক্ষা করুন। আদালতের ওপর আস্থা রাখুন। ছাত্রলীগ মনে করে, দেশের মানুষের জন্য যেটা ভালো আদালত সে অনুযায়ী সিদ্ধান্তই দেবেন।’

এর আগে, একই ইস্যুতে কথা বলেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।  তিনি বলেন,‘বুধবার আদালত একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের সময় নিয়েছেন। কারো কোনো কথা থাকলে তা আদালতে বিস্তারিত বলতে পারবেন। এমন অবস্থায় আদালতের এ আদেশ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা আদালত অবমাননার শামিল হবে বলেই মনে করি।’

এ সময় তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছেন তারা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় -এমন কোন কর্মসূচি দেবেন না।’