নিজস্ব প্রতিবেদক *
জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ চট্টগ্রাম মহানগর আয়োজিত শিশু উৎসব গতকাল শনিবার (৯ মার্চ) বিকেলে নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। শিশু-কিশোর আন্দোলনে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার জন্য ‘খেলাঘর’কে Centre for Research & Information (CRI) এর পক্ষ থেকে জয় বাংলা Youth Award-2023 প্রদান করায় খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে আনন্দ র্যালি, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ লালা’র সভাপতিত্বে এবং সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য প্রীতম দাশ’র সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ.টি.এম পেয়ারুল ইসলাম। এছাড়া আলোচক ছিলেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রকৌশলী রথীন সেন, কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ। আলোচনায় অংশ নেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক রোজী সেন, চন্দন পাল, জাতীয় পরিষদ সদস্য দেবাশীষ রায়, মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন আজাদ, ইকবাল হোসেন, চৌধুরী জহির উদ্দিন বাবর, মহিউদ্দিন শাহ, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পার্থ প্রতীম নাহা, শরণ বড়ুয়া, জয়ন্ত রাহা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ বসু। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি দেশপ্রেমিক প্রগতিশীল, মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সুনাগারিক হিসেবে নবপ্রজন্ম গঠনের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। বক্তারা বন্দরনগরীর প্রতিটি এলাকায় অন্তত একটি করে খেলার মাঠ নিশ্চিত করার এবং সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
দিনব্যাপী শিশু উৎসব জাতীয় সঙ্গীত ও খেলাঘর সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। বেলুন উড়িয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল নাথ। এরপর বিভিন্ন শাখা আসরের ভাই-বোন ও শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। এরপর থিয়েটার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে শিশু-কিশোরদের পরিবেশনায় নাটক ‘সবাই রাজা’ মঞ্চস্থ করা হয়। নাটকটি নির্দেশনায় ছিলেন খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য পার্থ প্রতীম নাহা। এছাড়া মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে আয়োজিত আসরভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগীতা ও বিভাগভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সঞ্চালনায় ছিলেন কারুণ্য খাস্তগীর ও তাজরিয়ান মাহমুদ রংধনু।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, খেলাঘর ১৯৫২ সাল থেকে একটি অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক ও মানবিকবোধসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে। বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা প্রসারের মধ্য দিয়ে শিশুর জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে খেলাঘর কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে। খেলাঘর শিশু-কিশোরদের সুস্থ দেহ ও মন গঠন, সাহিত্য-সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির চর্চা এবং সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিভার বিকাশ এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও শিক্ষার প্রসারে কাজ করে। আগামী দিনে এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।