নিজস্ব প্রতিবেদক *
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর) আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাউদ্দিনের আদালতে এই আদেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত ১৬ জানুারি চট্টগ্রাম ১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি আইনের ২০০৮-এর বিধি ৩ ধারায় মামলা করেছিলেন ডবলমুরিং থানার নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল। এই মামলায় মহিউদ্দিন বাচ্চুর প্রতি সমন দিয়েছিলেন আদালত।
বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে উপস্থিত থাকার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তাই তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।’
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মহিউদ্দিন বাচ্চু এমপি।
গত ২২ ডিসেম্বর তার নির্বাচনী এলাকার সব মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের এক হাজার টাকা প্রদান করেছেন এবং মাদানী মসজিদে এক লাখ টাকার অনুদাানের চেক বিতরণ করেছেন। যা নামাজের আগে ইমাম মুসল্লিদের অবহিত করেছেন। একইভাবে ২৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনী এলাকার মসজিদগুলোর ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের ৬০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন বলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনজুর আলম। এর প্রেক্ষিতে রিটার্নিং অফিসার ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিতে প্রেরণ করেন।
পরবর্তী সময়ে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান অনুসন্ধানে নির্বাচনী এলাকার মাদানি মসজিদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু নিজে উপস্থিত থেকে ওয়ার্ডের ২০-২৫টি মসজিদের অনুকূলে এক লাখ টাকা করে এবং ২৩ ডিসেম্বর রামপুরা ওয়ার্ডে তার পক্ষে মসজিদ, মন্দির ও পেগোডার প্রতিনিধিদের মাঝে অনুদানের চিক বিতরণ করছেন বলে জানতে পারেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু নিজে এবং তার পক্ষে নির্বাচনের আগের সময়ে অনুদানের অর্থ বিতরণ করার ঘটনার আংশিক সত্যতা পাওয়া যায়।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, একজন প্রার্থীর নিজে এবং তার পক্ষে নির্বাচনের আগের সময়ে নির্বাচনী এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে অনুদানের অর্থ বিতরণ করা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮’-এর বিধি ৩-এর পরিপন্থী। তাই মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন দেন অনুসন্ধান কমিটি।
এমতাবস্থায়, গত ৪ জানুয়ারি অভিযুক্ত প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে অপরাধ বিবেচনায় অভিযোগ দায়েরর জন্য নির্বাচন কমিশন ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এরপর এই মামলা করা হয়। চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু।