নিজস্ব প্রতিবেদক *
বিশ্বপরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার্থে অতিথি পাখির শিকার বন্ধের দাবীতে বিপ্লবী তারকেশ্বর দস্তিদার স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আজ শনিবার ( ৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রকৃতির অপরূপ সৌর্ন্দয্যেঘেরা কাপ্তাই লেকশোর পার্কে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার সিঞ্চন ভৌমিক। প্রধানঅতিথি ছিলেন টিভি ও বেতারশিল্পী ইকবাল হায়দার। প্রধানবক্তা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. শাহী নেওয়াজ, বিশেষ অতিথি নারীনেত্রী শিরিন আক্তার, আক্তারুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যক্ষ মো. সানাউল্লাহ।
এতে বক্তারা বলেন, প্রকৃতি, পরিবেশ ও বনের জন্য পাখি অপরিহার্য। পাখির সংখ্যা যেখানে কম, সেখানে প্রকৃতি মৃতপ্রায়। প্রকৃতির সৌন্দর্যেও পাখির ভূমিকা অনেক। পাখিবিজ্ঞানীরা বলেছেন, মানুষ না থাকলে পাখি থাকবে কিন্তু পাখি না থাকলে মানুষ থাকবে না। বিজ্ঞানের অতি উন্নয়নের ফলে সারা পৃথিবীতে পাখি কমে যাচ্ছে বলে বলেন বক্তারা। একটি বৈশ্বিক গবেষণার তথ্য মতে, পৃথিবীতে পাখির সংখ্যা ১১ হাজার প্রজাতির। এর মধ্যে ৪৮শতাংশ বা ৫ হাজার ২৪৫ প্রজাতির পাখির সংখ্যা কমেছে। আমাদের দেশের পাখির সংখ্যা ৬৫০ প্রজাতির। বিলুপ্ত হয়েছে ৩০ প্রজাতির। পাখি বিজ্ঞানিদের মতে, আজকে থেকে ২ দশক আগেও শীতমৌসুমে আমাদের দেশে প্রায় ২১৫ প্রজাতির পাখি আসতো। এখন এর পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। এর কারণ হিসেবে বলেন অপরিকল্পিতভাবে নগরায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, জলাশয় ভরাট করে বাড়িঘরনির্মাণ, গাড়ির উচ্চ হর্ন, আতশবাজি, মাইকিং, কনসার্টের শব্দ, কনস্ট্রাকশন সাইটের শব্দ, প্রশাসনের ভূমিকা পালনে অবহেলা। বক্তারা বলেন, গত ১ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ- নতুন বছরকে বরণ করার নামে আতশবাজি ও ফটকা ফাটিয়ে প্রায় ২০০ পাখি হত্যা করেছে ঢাকা শহরে। আজ পর্যন্ত একজনকেও প্রশাসন আইনের আওতায় আনতে পারেনি। এটা আমাদের জন্য খুবই লজ্জ্বাজনক। আমাদের দেশে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আতশবাজি ও ফটকা ফাটানো হচ্ছে- এটি পাখির জন্য খুবই ক্ষতিকর। কিন্তু প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় আমরা হতাশ ও হতবাক। অতিথিপাখি শিকার বন্ধ ও রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক আইন করার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। অতিথি পাখির জন্য সরকারিভাবে খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। ২০১২ সালের বন ও বন্যপ্রাণি আইনকে কঠোরভাবে পালন করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানান বক্তারা।