একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছিল যার প্রবাদতুল্য অবদান,দেশমাতৃকার সাহসী সেই সূর্যসন্তান,সীতাকুণ্ড পৌরসভার সাবেক মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা নায়েক (অব.) শফিউল আলম (৭৯) আর নেই। দীর্ঘদিন রোগভোগের পর আজ রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের মেট্রোপলিটন হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি –রাজেউন)। মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী ও আত্মীয়স্বজন রেখে যান।
নায়েক শফি হিসেবে সমধিক পরিচিত এ অসীম সাহসী মানুষটি ১৯৪৬ সালের ৩ মার্চ সীতাকুণ্ড পৌরসভার পশ্চিম মহাদেবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিবারিক ও সামাজিক বাস্তবতায় লেখাপড়া বেশিদূর করতে পারেননি। অষ্টম শ্রেণি পাশ করেই তিনি জীরনসংগ্রামে লিপ্ত হন। শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি ইস্পাহানি চা ফ্যাক্টরিতে চাকরি শুরু করেন।পরবর্তীতে দেশসেবার প্রত্যয়ে ১৯৬৫ সালের ২৭ জুন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন একনম্বর সেক্টরে গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন। সীতাকুণ্ডে যার ভয়ে একসময় ‘বাঘে-মহিষে একঘাটে জল খেতো’, দেশ স্বাধীনের পর তিনি আবার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।১৯৭৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন।
১৯৮৮ ,১৯৯১ ও ১৯৯৭ সালে টানা তিনবার তিনি সীতাকুণ্ড সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে নবগঠিত সীতাকুণ্ড পৌরসভার প্রশাসক ও ২০০২ সালে অনুষ্ঠিত সীতাকুণ্ড পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সফলভাবে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ১৯৯১ সালে সীতাকুণ্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন।
জনপ্রতিনিধি থাকাকালীন নায়েক শফি সীতাকুণ্ড পৌরএলাকার শিক্ষা ও ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখেন।
আগামীকাল সোমবার সকাল দশটায় সীতাকুণ্ড সরকারি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
