আগামী জুলাই থেকে ভাতা ৩৫ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকেরা। তাদের দাবি, জুলাই থেকে নয়, জানুয়ারি থেকেই এই ভাতা কার্যকর করতে হবে। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে এর আগে রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক বৈঠকে ট্রেইনি চিকিৎসকদের জানুয়ারি থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং জুলাই থেকে ৩৫ হাজার টাকা ভাতা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ওই বৈঠকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পক্ষে ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস সোসাইটির সভাপতি ডা. জাবির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও বৈঠকে অন্যদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটির ডা. মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ড্যাব) কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আতিয়ার রহমান, যুগ্ম সম্পাদক ডা. রুহুল কুদ্দুস বিপ্লবসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ওই সময় বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল আন্দোলনরত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল। তবে আন্দোলনরত অন্যদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকেরা। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ডা. নুরুন্নবী এ ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান স্যারের আমন্ত্রণে আমরা চার জনের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে ড্যাব-এনডিএফের পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক কমিটির কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সায়েদুর রহমান স্যার জানান, সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ে আমাদের অতিরিক্ত দেয়ার মতো কোনো টাকা নেই, তাই আপাতত তিনি আন্দোলন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। সেই সঙ্গে আগামী জুলাই মাস থেকে ৩৫ হাজার টাকা ভাতা দেয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। পরে আমরা আলোচনা শেষে ফিরে এসেছি।
ডা. নুরুন্নবী বলেন, এখানে (শাহবাগ) আসার পর আমরা বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানুয়ারি মাস থেকেই ৩৫ হাজার টাকা ভাতা দাবি করছি। অন্যথায় চিকিৎসকেরা আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ভাতা বৃদ্ধির দাবি আদায়ে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ট্রেইনি চিকিৎসকরা। বেঁধে দেয়া এই সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে দেশের প্রায় ১৩ হাজার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক একযোগে কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেয়া হয়। তবে বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় পরদিন ২২ ডিসেম্বর আন্দোলন শুরু করেন ট্রেইনি চিকিৎসকেরা।
ওইদিন ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন চিকিৎসকরা। পরবর্তীতে পাঁচ হাজার টাকা ভাতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। তবে ট্রেইনি চিকিৎসকরা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন এবং আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। সবশেষ রোববার একই দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনরত ট্রেইনি চিকিৎসকরা।
অন্যদিকে দ্বিতীয় দফায় চিকিৎসকদের অবরোধকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে রোববার সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেই সঙ্গে শাহবাগ মোড়ে প্রস্তুত ছিল সাঁজোয়া যান এপিসি ও জলকামান।