রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফটিকছড়িতে নিখোঁজ ৩ স্কুল ছাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলায় তিন স্কুলশিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। এতে উপজেলা জুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড় । তিনজনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নিখোঁজ হওয়ায় অভিভাবকরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে রীতিমতো ভয় পাচ্ছেন।সৃষ্টি হয়েছে এক ধরনের উদ্বেগজনক পরিস্থিতি

পৃথক এ তিন ঘটনাকে অপহরণ হিসেবে পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হলেও পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। পুলিশের ধারণা স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা কারো সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে স্বইচ্ছায় ঘর থেকে পালিয়ে যেতে পারে। কারণ অপহরণ করার মতো ঘটনা পুলিশের নজরে আসেনি। তাই স্বেচ্ছায় স্কুল থেকে সিএনসি রিক্সায় বন্ধুর সঙ্গে পালিয়ে যেতে পারে শিক্ষার্থীরা। এসব ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি রুজু করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।bsrm

জানা যায়, গত ১১ ডিসেম্বর (বুধবার) উপজেলা সদরের দুই কিশোরী নিখোঁজ হন। ৫ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন ভুজপুর থেকে অপর কিশোরী। তিনটি ঘটনায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে থানায়।

পারিবারিক সূত্র জানায়, ফটিকছড়ি পাইলট গার্লস স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সানজিদা ইসলাম (১৪)। সে পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ হাসানের কন্যা। তার পরিবারের দাবি বুধবার সকাল ৯টায় ফটিকছড়ি গার্লস স্কুলে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় বিবিরহাট বাস স্টেশন থেকে সে কোনোভাবে নিখোঁজ হয়। তার বাবা মোহাম্মদ হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আমার মেয়েকে কেউ অপহরণ করেছে। আমি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে বলেছে। কিন্তু এখনও আমার মেয়ের খোঁজ দিতে পারেনি। আমরাও আত্নীয় স্বজনদের মাধ্যমে খোঁজ নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি সন্ধান মেলেনি।

ফটিকছড়ির হাইদচকিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী শশী আক্তার নিহা (১৪)। সেও পরীক্ষা দিতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রথমে সে স্কুলে যায়। এরপর কোথায় কীভাবে স্কুল থেকে নিখোঁজ হয় তা কেউ জানে না। পাইন্দং ইউনিয়নের দর্জি বাড়ীর মোহাম্মদ আরিফের কন্যা। তিনি দুবাই প্রবাসী। তার বাবার বড় ভাই মোহাম্মদ সেলিম বলেন, নিহা প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিকভাবে স্কুলে যায়। কিন্তু বিকাল ৩টার দিকে আমরা জানতে পারি সে বাড়ি আসেনি। তখন আমরা খোঁজাখুজি শুরু করি। আমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি। কিন্তু এখনও আমার ভাতিজির সন্ধান পাইনি।ads din

ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানা এলাকার হেয়াঁকো গ্রিন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুরহাবা আক্তার নিশু (১৫) নিখোঁজ হন। বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশে গিয়ে সে নিঁখোজ হয়েছে বলে জানা গেছে। সে ওই এলাকার নুরুল হুদার কন্যা। তিনি ৫ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়েছে বলে জানান তার বাবা। থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর পুলিশ এখনও সন্ধান দিতে পারেনি।

নুরুল হুদা  বলেন, আমার মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফিরেনি। আমি আমার মেয়ের সন্ধান চাই। সে যদি কারো সঙ্গে পালিয়ে গিয়েও থাকে আমি সেই তথ্যটি হলেও পেতে চাই। তখন মনকে স্বান্তনা দিতে পারবো এই ভেবে যে, আমার মেয়ে বেঁচে আছে। কিন্তু পুলিশ কোনো কাজই করছে না।

এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) রফিলুল ইসলাম বলেন- ফটিকছড়ি সদর থেকে দুই কিশোরী নিখোঁজ হয়েছে। এ দুই ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। তবে শশী আক্তার নিহা নামের মেয়েটিকে নাকি পাওয়া গেছে -এমন খবর ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে। কোথায় গেছে এবং কীভাবে  এসেছে আমরা তার পরিবারের সাথে কথা বলবো। ওসি আরও বলেন,  যতদুর আমরা  খবরাখবর  নিয়ে এবং আলামতের ভিত্তিতে বলতে পারি, এসব ছাত্রীরা স্ব-ইচ্ছায়  বন্ধুর সাথে সিএনজি রিক্সায় চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তারপরও আমাদের দুই তদন্তকারী কর্মকর্তা জোরালোভাবে  উদ্ধার অভিযানে ব্যস্ত আছেন। তিনি  এলাকার  সবাইকে কোনো ধরনের উৎকণ্ঠিত না হতে ও বিভ্রান্তমূলক কোনো ঘটনা ঘটবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অপর কিশোরীর ঘটনায় ভূজপুর থানায় জিডি হয়েছে। ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরজুন বলেন, শিক্ষার্থী নুরহাবা আক্তার নিশু নিখোঁজের ঘটনায় আমরা সাধারণ ডায়েরি গ্রহণ করেছি। খবরাখবর নিয়ে আমরা উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

সর্বশেষ

এই বিভাগের আরও