জাপানে নতুন বছরের প্রথমদিনে এক শক্তিশালী ভূমিকম্পে অন্তত ৩০জনের মৃত্যু এবং বহু ভবন ভেঙে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভূমিকম্পের পর থেকে হাজার হাজার ঘরবাড়ি বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প জাপানের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানে। পরে আরো ১৪০ বারেরও বেশি বিভিন্ন কম্পন অনুভূত হয়েছে। যেগুলোর মাত্রা ছিল ৩ থেকে ৬ দশমিক ১ এর মধ্যে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর। খবর রয়টার্সের।
ভূমিকম্পের পর জাপানের পশ্চিম উপকূলে সুনামির সতর্কতা সতর্কতা জারি করা হয়। উপকূলীয় কিছু এলাকার বাসিন্দাদের উঁচু স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এসময় সুনামির ঢেউয়ে অনেক গাড়ি ও বাড়ি সাগরে ভেসে গেছে।
ভূমিকম্পের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া এলাকাগুলোতে পৌঁছতে মঙ্গলবার জাপানের উদ্ধারকারী দলগুলোকে সংগ্রাম করতে হচ্ছিল। ভূমিকম্পে ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের নোতো উপদ্বীপ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সারা দেশ থেকে কয়েক হাজার সামরিক বাহিনীর সদস্য, দমকল কর্মী ও পুলিশ কর্মকর্তা ওই এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
কিন্তু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় ও রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা বিঘ্নিত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ পরিমাণ নির্ণয় করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে তাদের।
ইশকাওয়া প্রিফেকচারের বহু রেল পরিষেবা, ফেরি ও ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের একটি বিমানবন্দরের রানওয়েতে ফাটল দেখা দেয়ায় সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
জরুরি বৈঠকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, ‘ভূমিকম্পে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের খুঁজে বের করা ও উদ্ধার করা এখন অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং।’ রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নোতো উপদ্বীপের উত্তরপ্রান্তে পৌঁছনো উদ্ধারকারীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। ওই এলাকায় চালানো হেলিকপ্টার জরিপে অনেক জায়গায় এখনো আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। আক্রান্ত এলাকার ভবন ও অবকাঠামোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি দেখা গেছে।
ইশিকাওয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের নিকটবর্তী শহর ওয়াজিমায়।