[bangla_date] || [english_date]

নিজস্ব প্রতিবেদক *

অনেকটাই নিরুত্তাপে পরিণত হয়েছে চলমান ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন । নির্দলীয় রূপে চলে গেছে দলীয়ভাবে অনুষ্ঠিত উপজেলা ভোট । ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে প্রার্থী না দেয়া এবং বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য দলের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণায় উপজেলা নির্বাচন এখনো জমে উঠেনি। ভোটাররা অনেকটাই আগ্রহহীন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের আইজি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান, ইসির মাঠ প্রশাসন ও ডিসি-এসপিদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরপর দুটি বৈঠক থেকে ভোট সুষ্ঠু করতে কঠোর বার্তা দিতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের করণীয় নির্ধারণে আগামী ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ১১টায় নির্বাচন ভবনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, পুলিশের আইজি, বিজিবি, র‍্যাব, কোস্ট গার্ড, আনসার-ভিডিপি, ডিজিএফআই, এনএসআই মহাপরিচালক, এসপির অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শককে নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে গত ১৮ এপ্রিল সংশ্লিষ্টদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্য কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। এরপর সব জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আগামী ২৫ এপ্রিল বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঐ দুই বৈঠক থেকে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেবে ইসি।

এদিকে, যদিও গতকাল মানিকগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলছেনে, এটি কোনো রাজনতৈকি নির্বাচন নয়, এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। এবারের নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক ফ্লেবার নেই।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের যথা সময়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা পাঠিয়েছেন। ২৫ এপ্রিলের বৈঠকের বিষয় উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে সব বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, জেলা প্রশাসক, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপারদের উপস্থিতিতে আগামী ২৫ এপ্রিল, বেলা ১১টায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। নির্দেশনাটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শক, সব বিভাগীয় কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, সব ডিসি ও এসপিদের পাঠানো হয়েছে।

চার ধাপে অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তিন ধাপের তপশিল ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় শেষ। বৈধ প্রার্থী ১ হাজার ৭৮৬ জন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে। এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।

দ্বিতীয় ধাপের তপসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় আজ রবিবার। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে। এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।

তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট হবে। এই ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।  চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী ৫ জুন।