১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ || ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোড়গোঁড়ায় পৌঁছে দিতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান সরকার। উদ্যোগের সুফল সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দিতে হাসপাতালগুলোকে উদ্যোগী হতে হবে। মানুষ আস্থা স্থাপন করতে পারে সেজন্য তাদের আরও কাজ করা প্রয়োজন।’

শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম ও বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতসহ বহিঃবিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোন উচ্চতায় রয়েছে তা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে জি-২০ সম্মেলনে যাচ্ছেন, জি-২০’র বর্তমান প্রেসিডেন্ট হচ্ছে ভারত। এই উপমহাদেশ থেকে আর কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, শুধুমাত্র বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গতকাল রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছেন, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী আসবেন। কয়েকদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের বহুমুখি সহযোগিতা এবং বহুমাত্রিক সম্পর্কের প্রমাণ হচ্ছে তাদের সাথে আমাদের নিরাপত্তা সংলাপ।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ম্যানেজিং ট্রাস্টি মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খাঁন, ট্রাস্টি বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. মোরশেদ হোসেন, অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম বড়ুয়া।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছরে সরকারি বেসরকারি বহু মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে। সারাদেশে প্রায় ১২ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে, প্রতি ছয় হাজার মানুষের জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক। এসব কমিউনিটি ক্লিনিকে ৩০ প্রকারের ঔষধ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়। এটি আশপাশের দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ কোথাও নেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এসব কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপিত হয়েছে। আমাদের গড় আয়ু যেখানে ছিল ৩৯ বছর সেটি এখন ভারত পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের অতিরিক্ত মুনাফা লাভের প্রবৃত্তি আমাদের চিকিৎসাবো এবং ডাক্তারদের উপর আস্থাহীনতা তৈরী করছে, এবং সাধারণ মানুষকে প্রচন্ড ভোগাচ্ছে। অনেক সময় শোনা যায়, রোগীকে আইসিওতে দেয়ার প্রয়োজন নেই, দিয়ে রেখেছেন।’

রোগী এমনিতেই মৃত্যুবরণ করবে, সেটাকে লাইফ সাপোর্টে দিচ্ছে। এরকম অহরহ ঘটনা শুনতে পায়। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ও ভুমিকা রাখতে পারে।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল সাশ্রয়ীমূল্যে ও গরীবদের বিনামূলে স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উদাহরণ তৈরী করবে আশা প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন ডেঙ্গু নিয়েও অপপ্রচার শুরু করেছে। মনে হচ্ছে ডেঙ্গু মশার জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী। ডেঙ্গু মশা আওয়ামী লীগ, বিএনপি চিনেনা। আমাদের সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং জনগণের সচেতনতায় আমরা ডেঙ্গু সফলভাবে মোকাবেলা করতে পারবো, যেভাবে করোনাকে মোকাবেলা করেছি।

তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গুর যেমন মারাত্মক, বিএনপি তার চেয়েও মারাত্মক। ডেঙ্গু মশা কামড়ায় আর বিএনপি মানুষ পোড়ায়। অনেকক্ষেত্রে ডেঙ্গুর চেয়ে বিএনপি মারাত্মক। আমরা সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। শুধুমাত্র বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত দেশ রচনা নয়, আমরা বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশকে একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চাই। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবার সাথে যুক্তদের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।