দক্ষতা বৃদ্ধি করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি কাজের গুনগত মান বজায় রাখার উপর গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীর পোর্ট কানেক্টিং সড়কটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। দেশের আমদানি-রপ্তানিবাহী গাড়িগুলো এই সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করে। দীর্ঘ কয়েক বছর পূর্বে সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হলেও নানান জটিলতার কারণে যথাসময়ে এই সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়নি। পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে জাইকার অর্থায়নে অলংকার হতে নীমতলা পর্যন্ত ৫.৪০কি.মি. দৈর্ঘ্য সড়কের গড় প্রস্থ ৩৬.৫০মিটারের ৬ লেনের সড়কটি ১৭৯.৭০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। নগরীর প্রথম এই সড়কে পথচারী পারাপার নিরাপদ করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির থ্রিডি জেব্রা ক্রসিং সংযুক্ত করা হয়েছে।
আজ বুধবার (০৯ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রামের লাইফ লাইন খ্যাত পোর্ট কানেক্টিং (অলংকার হতে নীমতলা) পর্যন্ত সড়কের উপ-প্রকল্প কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর নুরুল আমিন, অধ্যাপক মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহনুর বেগম, হুরে আরা বিউটি, তসলিমা বেগম নুরজাহান, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ও সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু ছালেহ, মুনিরুল হুদা, ঝুলন কুমার দাশ, নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার জাহান ও তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সিটি মেয়র আরো বলেন, নগরীর সড়কগুলোর ধারণক্ষমতা অনুযায়ী দশ হতে বার টন ওজনের গাড়ি চলাচলের উপযোগী। কিন্তু বন্দরের পণ্য বহনকারি ট্রাক, লরিগুলো পঁচিশ থেকে ত্রিশ টন ওজনের মালামাল বহন করে চলাচল করছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলো সংস্কারের পর অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে চলাচলের অনপোযুগী হয়ে পড়ে। মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম আমাদের দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী, এর মধ্য দিয়েই সঞ্চালিত হয় দেশের অর্থনৈতিক জীবনীশক্তি। দেশের রপ্তানী বাণিজ্যের সিংহভাগ সংঘটিত হয় চট্টগ্রামের উপর দিয়ে। চট্টগ্রাম নগরীর সড়কগুলোর উপর সারা দেশের আমদানি-রপ্তানি পরিবহন চলাচলের কারণে সড়কগুলোর রক্ষণা-বেক্ষণ ও সম্প্রসারণের দায়িত্ব চট্টগ্রাম বন্দরকে নেয়ার আহ্বান জানান।
বিদ্যালয় ও কলেজ ভবনের উদ্বোধন

পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার যৌথ অর্থায়নে বিদ্যালয় ও কলেজের নতুন ভবন নির্মিত হয়। নতুন ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ। চসিকের নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও জাইকার অর্থায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মানসম্মত ও আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এর মাধ্যমে কর্পোরেশনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পর্যাপ্ত আলো বাতাসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মনের ভেতর যে সুপ্ত প্রতিভা, সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে তা শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যম হচ্ছে শিক্ষা। এ লক্ষ বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নগরবাসির সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য স্নাতক ডিগ্রি কলেজসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। নগরবাসির ট্যাক্সের টাকায়ই চসিকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ পরিচালিত হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আজ বুধবার দুপুরে পতেঙ্গা সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের নতুন ভবনের উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন।
উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল বারেকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সংরক্ষিত কাউন্সিলর শাহনুর বেগম, চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা বেগম লুৎফুন নাহার। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ ইসমত আরা। উপস্থিত ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ও সিটি মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু ছালেহ, মুনিরুল হুদা, ঝুলন কুমার দাশ প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় যে স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন তা আজ বাস্তব। এখন আমরা স্কুল কলেজের ভর্তি, ফলাফল, হাজিরা, বেতন জমাকরণ ও দাপ্তরিক কাজসহ প্রায় সব বিষয়ে ডিজিটালাইজ করতে সক্ষম হয়েছি। শুরু করতে পেরেছি নিজস্ব ডিজিটাল অটোমেশন পদ্ধতি। এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতার কারণে সম্ভব হয়েছে। আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদেরকে ডিজিটাল হতে হবে। তিনি জানান, অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয় ২১ কোটি ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। নবনির্মিত এই ভবনে রয়েছে অত্যাধুনিক সোলার সিস্টেম, জেনারেটর ও সাবস্টেশন, দুর্যোগকালিন সময়ে নিরাপদে প্রতিবন্ধীসহ মানুষের আশ্রয় কেন্দ্র, কেন্টিন ২টি, প্রশাসনিক কক্ষ, আধুনিক শ্রেণিকক্ষ ১৮টি, অধ্যক্ষ রুম, প্রধান শিক্ষকের রুম, টিচার্স রুম ২টি, আধুনিক শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বিজ্ঞানাগার (কস্পিউটার ল্যাব ২টি, কেমিস্ট্রি ল্যাব ২টি, বায়োলজি ল্যাব ২টি, পদার্থ বিদ্যা ল্যাব ২টি) লাইব্রেরী ২টি, অ্যাম্পি থিয়েটার, লিফট ২টি, প্রতিফ্লোরে ওয়াশরুম, গার্লস কমনরুম ২টি, মিটিং রুম ২টি, এ্যাডমিশন ফান্ড, একাউন্টস অফিস ২টি, ইনডোর গেম, সুপ্রসস্ত বারান্দাসহ বহুমুখী সুযোগ সুবিধা।
এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধে পরিচালিত অভিযানে ৩৬ হাজার টাকা জরিমানা

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আজ বুধবার নগরীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। চসিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী পরিচালিত অভিযানে বায়েজিদ থানাধীন বঙ্গবন্ধু এভিনিউর অক্সিজেন-কুয়াইশ সংযোগ সড়কে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে এডিস মশার উৎসস্থল বিভিন্ন বাসা বাড়ীর ছাদ বাগান ও নির্মানাধীন ভবন পরিদর্শন করা হয়। এডিস মশার জন্মস্থান পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা হয়। এই সময় ৭টি ছাদ বাগানের ফুলের টবে এডিস মশার বংশ বিস্তারে জমাটবদ্ধ পানির উৎস পাওয়ায় ভবন মালিকের বিরুদ্ধে মামলা রুজু পূর্বক ১১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজন পরিচালিত অপর অভিযানে নগরীর বাদুরতলা ও কাপাসগোলা এলাকায় রাস্তা এবং ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করায় এবং নির্মাণ সামগ্রী রেখে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার দায়ে ৫ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু পূর্বক ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানকালে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটগণকে সহায়তা প্রদান করেন।
