উন্নত চিকিৎসা সেবায় ভারতের স্বনামধন্য অ্যাপোলো হাসপাতাল গ্রুপের সাথে চট্টগ্রামের ইমপেরিয়াল হাসপাতালের সম্পাদিত সমঝোতা চুক্তি মোতাবেক চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় ইমপেরিয়াল হাসপাতালে অনুষ্ঠানিকভাবে এ অধ্যায়ের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এম.পি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফল এম.পি এবং ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. প্রতাপ কুমার রেড্ডি ও কো-চেয়ারম্যান ডা. প্রীতা রেড্ডি। বোর্ড মেম্বার ও দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমজাদুল ফেরদৌস চৌধুরী, গ্রুপ অংকলোজি ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট দীনেশ মাধবান, অ্যাপোলো পার্টনার হসপিটালের সিইও দেবীসন পিকে, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আবুল মোমেন, চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম।
গত ৪০ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী ৭৪টি হাসপাতালে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের অনবদ্য রেকর্ড করা ভারতের অগ্রগামী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাপোলো হাসপাতাল গ্রুপের সাথে উক্ত চুক্তি মোতাবেক ইমপেরিয়াল হাসপাতালের অপারেশন এবং ম্যানেজমেন্ট অ্যাপোলো হাসপাতালের সার্বিক তত্বাবধানে পরিচালনার পাশাপাশি চিকিৎসা জনশক্তি প্রশিক্ষণ, টেকনোলজী ট্রান্সফার, টেলিমেডিসিন ও টেলি রেডিওলজী সেবা প্রদানে সহযোগীতা করে আসছে। যার ফলে বাংলাদেশে প্রত্যাশিত মান সম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবার নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা রবিউল হোসেন বলেন, আমরা সুখী। ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অ্যাপোলো হাসপাতালের সাথে পার্টনারশীপের মাধ্যমে আমরা উন্নততর চিকিৎসা বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে দিতে পারবো বলে আশা রাখি। এই চুক্তির মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের আদলে টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে যৌথভাবে রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা সেবা ও পরবর্তী ফলোআপ গ্রহণ করতে পারবে। এতে করে দেশের বাহিরে যাওয়ার কষ্ট, অর্থ এবং সময় সাশ্রয় হবে। তিনি আরো বলেন, এই হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগ আমাদের জন্য গর্বের বিষয়, কারণ ইতিমধ্যে এই শিশু বিভাগ তার কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে এক অনন্য মাত্রায় পৌছেছে।
ক্লিনিক্যাল শ্রেষ্ঠত্ব ও মেডিক্যাল দক্ষতার বিশাল অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ মানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের অঙ্গীকার নিয়ে গ্রুপ অংকলোজি ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট দীনেশ মাধবান বলেন, ইমপেরিয়াল হাসপাতালের সাথে এই পার্টনারশীপে আমরা গর্বিত। বাংলাদেশে এ্যাপোলো হাসপাতালের ৪০ বছরের হাসপাতাল পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং হাজারো রোগীদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশীদের কাছে অ্যাপোলো হাসপাতাল আশার আলো হয়ে আছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেক দূর এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এম.পি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা খাতে শুধু সরকার নয়, সবার এগিয়ে আসা দরকার। চিকিৎসা খাতে বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী ভূমিকা শেখ হাসিনা সরকার রেখেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, কোনো সরকারই এতটা সংবেদনশীলতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি নজর দেয়নি। তিনি দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী অ্যাপোলো ইমপেরিয়ালে উন্নততর চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ভূমিমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। অনেক বছর এটি বাক্সবন্দি ছিল। পরে ২০০৯ সালে আবার এ সেবা চালু হয়। এখন ফ্যাশন হয়ে গেছে, সর্দি-কাশি হলে ডাক্তারের কাছে চলে যাই। সামান্য পেট ব্যথায় আমরা সিঙ্গাপুর চলে যাই। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে। তারা যেন ভালো চিকিৎসা সেবা পায়। অ্যাপোলোর সঙ্গে চুক্তি করার ফলে এই হাসপাতালের সেবার মান আরও বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস।
অ্যাপোলোর সঙ্গে ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের চুক্তি হওয়ায় দেশে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়বে বলে জানান শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফল এম.পি । তিনি বলেন, টেকসই স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পরিবেশের পাশাপাশি সেবার মানের উন্নয়ন দরকার। যার সবকিছুই এ হাসপাতালে আছে। ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে নার্সিং কলেজের পাশাপাশি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা হলে সেবা নিতে আসা রোগীরা আরও ভালো সেবা পাবে। অনুষ্ঠান শেষে ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ মধ্যহ্ন ভোজের সময় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।