১৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ || ৩রা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের পরিচয়ে মাথাতুলে দাঁড়াবার চুড়ান্ত মাস ডিসেম্বর, ৩০ লাখ প্রাণ ও অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বেদনা মিশে আছে এই বিজয়ক্ষণে। আগামীর বাংলাদেশ হবে তারুণ্যের। আজ যারা বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন তাদের দায়িত্ব অপরিসীম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া নেতেত্ব দিতে হবে প্রশাসন ক্যাডারদের। বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়ত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য আপনারদের মত তরুণদের দায়িত্ব নিতে হবে। আজ মঙ্গলবার সকালে ৪০তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন আইন কর্মকর্তা যুগ্ম জেলা জজ মনিষা মহাজন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট মারুফা বেগম নেলী, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রাণী চাকমা, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা, মো. হুমায়ুন কবির চৌধুরী প্রমুখ।

মেয়র আরো বলেন, আমাদের সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাঙ্গলী জাতি একটি সংগ্রাম মুখর জাতি। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে। পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশের ঐতিহ্যের সুনাম ও খ্যাতি আছে। এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তরুণ ক্যাডারদের  ভূমিকা  অপরিহার্য্য। মনে রাখতে হবে, সাধারণ পরিবারের সদস্য হিসেবে জনগণের টেক্সের টাকায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে এই পর্য্যায়ে আশা সম্ভব হয়েছে। উপনিবেশিক শাসনামল থেকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাক-হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করতে পারায়, আজ আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের অধিষ্ঠিত হতে পারছি। সেই ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখতে হবে। আমাদের সংবিধান বলে দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। প্রশাসন ক্যাডারের দায়িত্ব প্রাপ্ত হয়ে আমরা যেন নিজেদের জনগণের প্রভু না ভাবি। হতে হবে জনগণের সেবক এই মনোবৃত্তি নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহিদুল আলম বলেন, আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণকে সেবা দেয়াই আমাদের প্রধান কাজ। আজকে যারা ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন তাদের প্রতি মানুষের প্রত্যশা অনেক। মানুষের প্রত্যশা পূরণ করা গেলেই একজন সফল কর্মকর্তা হিসেবে জনগণের স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হবে। অনুষ্ঠানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারনা প্রদান করা হয়।

শিক্ষার মান বাড়াতে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে

চসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সভায় মেয়র বক্তব্য রাখছেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধরী

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আদর্শ জাতির আত্মপরিচয়ের বাহন তার প্রকৃত শিক্ষা। কোনো জাতিকে বিশ্বদরবারে উন্নত মর্যাদাশীল হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে বহুমুখী ও ব্যবহারিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ফল শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের দিক থেকে পাশের হার বেশি হলেও মানের দিক থেকে এখনো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পিছিয়ে আছে। শিক্ষার মান বাড়াতে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। শিক্ষকরাই পারে শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করে সঠিক গাইড লাইনের মাধ্যমে তাদের গড়ে তুলতে। মেয়র বলেন, সমাজে শিক্ষকের মর্যদা অনেক উপরে তাই এ পেশার মর্যদা অক্ষুণ্ন রাখতে প্রতিষ্ঠান প্রধান, শিক্ষক ও অভিভাবক সমন্বয়ে শিক্ষার মনোন্নয়নে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আজ মঙ্গলবার সকালে মেয়র দপ্তরে চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহের পরিচালনা কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহারের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল আলম, শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর ড.নিছার উদ্দীন আহমেদ মঞ্জু. সচিব

খালেদ মাহমুদ, শিক্ষা কর্মকর্তা উজলা রাণী চাকমা, ফতোয়াদ কলেজের অধ্যক্ষ, মো. হাসান তিবরিজি, চম্পা মজুমদার, শাহ আলম, অধ্যক্ষ ফাতেমা আজাদ সায়কা,অধ্যক্ষ কাঞ্চন দাশসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ।

মেয়র আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার মাধ্যমে দক্ষমানব  সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার সবধরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সেই জন্য সরকার পড়ালেখার  মানোন্নয়নে শিক্ষার্থী শিক্ষক ও শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আধুনিক সভ্যতার দৌড়ে হারিয়ে যাচ্ছে প্রচলিত নীতি নৈতিকতা, মূল্যবোধ, ক্রমশই বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়, নৈতিকতা বা মূল্যবোধের অবক্ষয়-যা বর্তমান সমাজের বড় সমস্যা। সুশিক্ষা সুপ্ত সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে মানবিক উন্নয়ন সাধন, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ও প্রযোগযোগ্য অভিজ্ঞতা অর্জন করে শিক্ষার্থীকে প্রকৃত শিক্ষিত হতে সাহায্যে করে। এ শিক্ষা ছাত্র-ছাত্রীদের আশাবাদী আত্মপ্রত্যয়ী উন্নত আলোকিত ও বিকাশিত করে। মেয়র বলেন, পাঠ্যবইয়ের মান ইদানিং যথেষ্ট উন্নত হয়েছে কিন্তু শ্রেণীকক্ষে পাঠাদানের পদ্ধতি পরিবর্তন না হলে তাতে অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছা সম্ভব না। তিনি পরিচালনা কমিটির সকলকে সততা ও আন্তুরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানউন্নয়ন, সুনাম-সুখ্যাতি বৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।