চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীস্থ ফয়স্ লেক বধ্যভূমিতে শহীদ দিবস উপলক্ষে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী । পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বেশ কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর ড নিছার উদ্দিন আহম্মদ মঞ্জু, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, মো. জাবেদ, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, আবদুল মান্নান, জহুরুল আলম জসিম, আবদুস সালাম মাসুম, অধ্যাপক মো. ইসমাইল, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট যুগ্ম জেলা জজ মনিষা মহাজন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো.হমায়ুন কবির চৌধুরী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী, সিবিএ সভাপতি ফরিদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানসহ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর মেয়র বলেন, ১৯৭১সালে ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর আলবদর, রাজাকার, আলশামসরা তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে দেশের মেধাবি সূর্য সন্তানদের হত্যা করে। তারা জানত যে, একটি দেশের সামগ্রিক মেধা ধ্বংস হয়ে গেলে সেই দেশের সকল উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথ অনুসরণ করতে পারলেই তাদের আত্মত্যাগ স্বার্থক হবে। একই ভাবে আত্মত্যাগের পথ বেয়ে বাংলাদেশ সুখি ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত হলেই তাদের প্রত্যাশা পুরণ হবে। মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধীদের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচারের মাধ্যমে আনেকের ফাঁসির রায় কার্যকর করেছেন এবং অনেকের বিচার এখনো চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় তিনি তরুণদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
ক্লাইমেট ও ওসেন রিস্ক বিষয়ক মতবিনিময় সভা

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে মানব জাতি আজ বিপদাপন্ন। জলবাযু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় এবং রুপকল্প ২০৪১ অর্জনে দেশের জনসংখ্যার সর্বাপেক্ষা সৃজনশীল ও উদ্যোমী অংশ যুবকদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। তিনি বলেন, জলবাযু পরিবর্তনের দায় বাংলাদেশের নয় তবে ক্ষয়ক্ষতির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সবার উপরে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশে বিশেষ করে চট্টগ্রামে সমুদ্র স্থরের উচ্চতা বৃদ্ধি লবনাক্ততা সমস্যা, বন্যা জলোচ্ছাস ইত্যাদি সবগুলো দিক দিয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রাও অনেক বেশী। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের ফলে বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় সঠিক নীতি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও প্রযুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থাপনার উপর জোর দেয়া প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তন, জীব বৈচিত্র হ্রাস, ভূমির অবক্ষয় ও মরুময়তা বিশ্বব্যাপী বর্তমানে চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ সমুহ সঠিক ও কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সেই সঙ্গে প্রয়োজন অংশীজনদের সম্মিলিত অংশগ্রহণ এবং সঠিক পরিকল্পনা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব জনগণের সাহস ও শক্তি নিয়ে বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমন উভয় ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রথম এলডিসি হিসেবে বাংলাদেশের নিজস্ব ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত ও ডেল্টা পরিকল্পনা ২০২১ প্রণয়ন করেন এবং এ্যাকশন প্ল্যান ঘোষণা করেন। তথাপি জলবায়ু পরিবর্তনের মত এই বিশাল ঝুঁকি মোকাবেলায় সঠিক গবেষণা অর্থ সহায়তা প্রয়োজন। ক্লাইমেট এ- ওশেন রিস্ক ভালনারেবিলিটি ইনডেক্স (কোরভি) বাংলাদেশের বিশেষ করে চট্টগ্রামের উপকুল এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় জলবায়ু স্মার্ট বিনিয়োগ ও স্থিতি স্থাপকতা আনায়নে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। আজ বুধবার বিকেলে বাটালিহিলস্থ চসিক নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে ক্লাইমেট ও ওসেন রিস্ক বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন, প্রফেসর ড. আমির মো. নসরুল্লাহ’র সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন- কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, চসিক
সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর, কোরভি চট্টগ্রামের সন্তোষ কুমার রাওনিয়ার, ড. ইমাদুল ইসলাম, মিসেস নাতালী প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, সমুদ্রের তীরবর্তী ভৌগলিক অবস্থান, মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা, অপ্রতুল প্রাকৃতিক সম্পদ এবং এর উপর অধিক নিভরশীলতা ইত্যাদির জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের বিপন্নতা খুবই ভয়াবহ তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী অধিক কার্বন নি:সরণকারী রাষ্ট্রগুলোর দায় রয়েছে বাংলাদেশকে বিপন্নতা থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপুরণ দেয়ার।
চসিক রাজস্ব বিভাগের ২নম্বর সার্কেলের আপীল শুনানী

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একটি সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান। নগরবাসির গৃহকর থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব দিয়ে নাগরিক সেবা প্রদান করা হয়। প্রতি ৫ বছর অন্তর নতুন করে কর মূল্যায়ন বিধান থাকলেও বিগত ২০১১-১২ সালের কোনো কর মূল্যায়ন করা হয়নি। ২০১৭ সালে গৃহকরের যে মূল্যায়ন হয়েছিল তা নগরবাসির আন্দোলনের কারণে স্থাগিত রাখা হয়েছিল ২০২২ সালে এসে মন্ত্রণালয় থেকে স্থগিতকৃত কর মূল্যায়ন আবার সচল করার নির্দেশনা আসে এই নির্দেশনা কার্যকর করতে গিয়ে দেখা যায় ২০১৭ সালের কর মূল্যায়ন যথেষ্ট অসংগতি রয়েছে। এই অসংগতিকে দূর করার জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। আলিল বোর্ডের আপিল করলে যে অসংগতি আছে তা দূর করা এবং করদাতাদের সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণ করার গুরুত্ব দেয়া হয়। বিষয়টিকে আরো সহজ করার জন্য তিনটি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে মেয়র কাউন্সিলর এবং আপিল বোর্ডেকে সঙ্গে নিয়ে করদাতাদের গণশুনানির ব্যবস্থা করা হয়। এই প্রক্রিয়া কার্যকর করতে আজ বুধবার সকালে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারের চসিক রাজস্ব বিভাগের ২নম্বর সার্কেলের ৪নম্বর রিভিউ বোর্ডের আওতাধীন ৪, ৫, ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেয়রের উপস্থিতিতে করদাতাদের করমূল্যায়নের উপর গনশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিতে ও মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাসেমের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন, আপিল বোর্ডের প্রধান কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল, এম আশরাফুল আলম, মো. কাজী নূরুল আমিন, মো. এছারারুল হক, রাজস্ব কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, কর কর্মকর্তা ও কর আদায়কারী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
মেয়র আরো বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে এই ধরণের শুনানি কার্যক্রম চলমান থাকবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন। গৃহকর নিয়ে একটি মহল যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এই গণশুনানির পর করতাদাদের বিভ্রান্তি অনেকাংশে কমে আসবে বলে জানান। আপীলে ৩শ জন করদাতা শুনানীতে অংশ নেন এবং তারা প্রত্যেকে আপীল শুনানীর উপর সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন।
নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবশের কারণে শামু বেকারীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আজ বুধবার নগরীতে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। চসিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী নগরীর হালিশহর থানাধীন রঙ্গিপাড়া এলাকার শামু বেকারীর কারখানার নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবশ এবং কর্মরত কর্মীদের হেলথ ফিটনেস সনদ না থাকায় শামু বেকারীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট মনীষা মহাজনের অপর অভিযানে নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন আরকান রোড ও বিএফআইডিসি রোডের উভয়পার্শে¦র রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করার দায়ে ৭ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা রুজু পূর্বক ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানকালে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটগণকে সহায়তা প্রদান করেন।
