চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী নগরীর হোল্ডিং সমুহের বিপরীতে ‘পি ফরমে প্রাপ্ত আপত্তিসমুহ নিস্পত্তির লক্ষ্যে গঠিত রিভিউ বোর্ডের শুনানীতে করদাতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন উল্লেখ করে বলেন, এখন থেকে করদাতাগণ আর বিভ্রান্ত হবার সুযোগ থাকবে না। করদাতাদের উপস্থিতিতে রিভিউ বোর্ড তাদের ইচ্ছা মাফিক কর নির্ধারণ করে দেয়ার কারণে সকলেই খুশি মনে বাড়ি ফিরেছেন। আজ বুধবার (২১ ডিসেম্বর)
সকালে পাহাড়তলী নয়াবাজার মোড়ে একটি কমিনিউটি সেন্টারে চসিক রাজস্ব বিভাগের ৬নম্বর সার্কেলের রিভিউ বোর্ডের গণশুনানিতে উপস্থিত থেকে আপত্তি নিস্পত্তিকালে তিনি একথা বলেন।
প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন রিভিউ বোর্ডের দায়িত্ব প্রাপ্ত কাউন্সিলর আবদুল মান্নান, ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, জহুরুল আলম জসিম , অধ্যাপক মো. ইসমাইল, মো. নূরুল আমিন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর তসলিমা নুরজাহান রুবি, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, রিভিউ বোর্ডের সদস্য এডভোকেট রোকন উদ্দিন মুন্না, প্রকৌশলী রশিদুল করিম ও কর কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান প্রমুখ।

মেয়র আরো বলেন, ২০১৭ সালে যে কর মূল্যায়ন করা হয়েছিল তাতে অনেক অসঙ্গতি ছিল। যার কারণে নগরবাসী আন্দোলন শুরু করলে তা স্থগিত করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন স্থগিত থাকার পর ২০২২ সালে তা পুনরায় চালু করার জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আসে, যে কারণে আবার কর আদায়ের কাজ শুরু করা হয়। কর মূল্যায়ন ক্ষেত্রে অসঙ্গতি দূর করার জন্য তিনিটি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। তিনি বলেন, আপিল বোর্ডে আপিল করলে তা শুনানীর মাধ্যমে সহনীয় পর্যায়ে কর নির্ধারণের ব্যবস্থা করা হয়। তারই অংশ হিসেবে প্রত্যেকটি সার্কেলে মেয়রের উপস্থিতিতে গণশুনানীর পদক্ষেপ গ্রহণ করলে স্বতস্ফূর্তভাবে করদাতারা আপিল শুনানিতে অংশ গ্রহণ করেন। কর দাতাগণের নিজেদের মতামত অনুযায়ী আপিল বোর্ড তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কর নির্ধারণ করে দিলে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অন্যদেরকে আপিলে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। আজ ২৫০টি হোল্ডিংয়ের নোটিশের মধ্যে ১৫৭টি হোল্ডিংয়ের সম্মানিত করদাতা গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করে তাদের মতামতের উপর কর ধার্য্য করায় মেয়র ও আপিল বোর্ডের সদস্যদের ধণ্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
মেয়র প্রসঙ্গক্রমে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। গৃহকরের উপর নির্ভর করে নগরীর উন্নয়ন ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদান করা হয়। এছাড়াও কর্পোরেশন কাজের আওতার বাহরে ৭৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪৬৩টি ফোরকানিয়া মাদ্রসা ও ৪১টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ৪টি মাতৃসদন ও জেনারেল হাসপাতাল পরিচালনা করতে ব্যাপক ভূর্তুকি দিতে হয়। যার ফলে চসিককে সাবলম্বী হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। পূর্বে সরকার থেকে যে থোক বরাদ্দ পাওয়া যেত তাও এখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ কারণে চসিকের রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহণ করে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করার কোনো বিকল্প নেই। তিনি নগরবাসীর উদেশ্যে বলেন, আপনারা নিয়মিত কর প্রদান করে আমাকে সহায়তা করুন আমি আমার দায়িত্ব পালোনকালে আপনাদের একটি সুন্দর নগরী উপহার দেবো। তিনি কর না দেয়ার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে সেবাকার্যে অংশ নিতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।