চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভ্যাকসিনের অপ্রতুল সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিশ্বের বহু দেশের আগে আমাদের দেশের আপাময় জনসাধারণকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদানের আওতায় নিয়ে এসেছেন-যা আমাদের জন্য বড় অর্জন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমনরোধে ৪র্থ ডোজ গ্রহণকারীদের ফাইজারের টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। মেয়র বলেন, সঠিক সময়ে টিকা দেয়ার ফলে দেশের মানুষ এখন নিরাপদ আছে। এতবড় একটি জনবহুল দেশে মৃত্যুশূন্য দিন অতিবাহিত করা বিরল একটি সাফল্যর বিষয়, সবার আন্তরিকাতা ও সহযোগিতায় আমরা কাজটি করে যাচ্ছি। নগরীর প্রতিটি মানুষকে প্রাপ্ত টিকা দেয়া হবে। নগরীতে কেউ টিকা বাইরে থাকবে না। আর এটা করা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।

মঙ্গলবার(২০ ডিসেম্বর) সকালে চসিক জেনারেল হাসপাতালে কোভিড-১৯ সংক্রমনরোধ করার টিকা ৪র্থ ডোজ উদ্বোধনকালে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য ষ্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, সংরিক্ষত কাউন্সিলর নিলু নাগ, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা, চসিক জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. তপন কুমার চক্রবতী, ডা. আকিল মাহমুদ নাফে, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মিজানুর রহমান প্রমুখ।
মেয়র আরো বলেন, অন্যান্য ডোজের মতো ৪র্থ ডোজ আপাতত: গনহারে দেয়া হবে না। নগরীর ১১টি পয়েন্ট চসিক পরিচালিত জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল, ছাপা মোতালেক হাসপাতাল, বন্দর টিলা হাসপাতাল, সিএম এইচ, বন্দর হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, কাট্টলী মোস্তফা হাকিম মাতৃসদন হাসপাতালে প্রতিদিন সকাল ৯টা হতে দুপুর ২ ঘটিকা পর্যন্ত টিকা কার্যক্রম চলবে। এ দফায় ৫শ্রেণীর মানুষ যেমন ষাটের ঊর্ধ্বে ব্যক্তি, সম্মুখসারির যোদ্ধা, কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি, মুক্তিযোদ্ধা, গর্ভবতী মহিলা ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের টিকা প্রদান করা হবে। মেয়র জানান, নগরীতে ১ম ডোজ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৩২ লাখ, ২য় ডোজ ২৮ লাখ, ৩য় ডোজ ১৮ লাখ, এবং ৪র্থ ডোজ প্রদান কার্যক্রম চলমান থাকবে। তিনি বলেন, চসিকের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা মওজুদ আছে। নগরবাসিকে কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা পেতে মাস্ক পরিধান, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ও স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার আহবান জানান।
পাঁচলাইশ সি.ক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানে মেয়র

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন, মানুষে মানুষে মিলনের মাধ্যমেই প্রকৃত উন্নয়ন। এ উন্নয়ন আর্থসামাজিক ও মানব সভ্যতার। নারীদের সুশিক্ষিত হয়ে দেশ গঠনের আহবান জানিয়ে মেয়র বলেন, উন্নয়নে নারীদের প্রাধান্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শিক্ষার জন্য এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ৬০ভাগ কোটা সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন। মেয়র ১৬বছরের নীচে মেয়েদের হাতে মোবাইল না দেয়ার জন্য অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ এ যুগে ব্যবহারিক শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। ব্যবহারিক শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতির চরম শিখরে আরোহন করতে পারে না। আজ মঙ্গলবার সকালে পাঁচলাইশ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০বছর পূর্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জুলফিকার আলী হায়দারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষক রাজন চক্রবর্তী। এতে আরো বক্তব্য রাখেন এটি এম জামাল উদ্দিন, আবদুস সাকুর ফারকী, এটি এম জমির উদ্দিন মানিক, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মফিজুর রহমান, নাছির উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ মিসেস জয়নাব বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, জসিম উদ্দিন, সাবেক প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব প্রমুখ। মেয়র আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার মেয়েদের শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে আসার জন্য বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, শিক্ষা বিস্তারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা সহজেই শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছে, ইংরেজী বছরের প্রথমে বিনামূল্যে প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত শিশুদের মাঝে পাঠ্য বই বিতরণ করছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের শুধু উচ্চ নম্বর প্রাপ্তির ব্যবস্থা না করে তার পাশাপাশি সামাজিক দক্ষতা, মানবতা ও নৈতিকতাসহ প্রয়োজনীয় মানবিক গুণাবলি এবং যে সব বিষয় তারা পড়ে সেগুলোর সঠিক ধারনা দেয়াকে বেশী গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূর্তকী কমিয়ে আনার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও পরিচালনা কমিটির সদস্যদের প্রতি আহবান জানান। মেয়র স্কুলের একটি ভবনের নাম প্রতিষ্ঠাতা আবদুর রাজ্জাকের নামে নামকরণ করা হবে বলে ঘোষনা দেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে স্কুলের ৪ জন প্রাক্তন ছাত্রী বিসিএস পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ডাক্তারী পেশায় নিয়োজিত হওয়ায় মেয়র তাদের সম্মাননা ক্রেষ্ট উপহার দেন। মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বেলুন উড়ানোর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করনে। পুর্নমিলনীতে আগত শিক্ষার্থীরা আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।