জাতীয় গ্রিড চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। আজ শনিবার (১২ নভেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর নিকট এ অনুরোধ রাখেন।
এ সময় সুজন বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী। এক কথায় চট্টগ্রামকে অর্থনৈতিক হৃদপিণ্ডও বলা চলে। এখানে বন্দর, কাস্টম, ইপিজেড, জ্বালানি তেল পরিশোধন, সার কারখানা, শিপব্রেকিং, স্টিল ও আয়রন শিল্প, জাহাজ নির্মাণ, পোশাক শিল্পসহ নানা প্রকারের ভারী, মাঝারি ও ছোট শিল্প-কারখানা অবস্থিত। এসব শিল্পে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের ব্যবহার হয়। চট্টগ্রাম বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উপর সারা বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভর করে। তাই জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রামকে উপযুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা একান্ত প্রয়োজন। বিদ্যুতের জন্য এসব শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হলে এর নেতিবাচক প্রভাব গিয়ে পড়বে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির উপর। তাই দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর্যাপ্তসংখ্যক সরবরাহ প্রদানের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের শিল্প-কারখানাকে বাঁচিয়ে রাখার অনুরোধ জানান সুজন। তিনি আরো বলেন বর্তমানে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা তাদের প্রতিষ্ঠানের ছাদে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর ফলে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ ছাড়াই প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে- যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় বলা চলে। এভাবে জাতীয় গ্রিডের ওপর নির্ভরতা কমাতে শিল্প-কারখানাগুলোকে স্বতন্ত্র সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সরকার লোডশেডিং, আলোকসজ্জ্বা নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুতের ব্যবহার সীমিত করাসহ নানাবিধ পরিকল্পনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও রাত ৮টায় শপিং মল বন্ধের নির্দেশনা কেউ মানছে না। এছাড়া সামাজিক অনুষ্ঠানের নামে যত্রতত্র অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জ্বাও কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া বিদ্যুতের প্রধান সঞ্চালন লাইন থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রীয় শীতাতপ ব্যবস্থা পরিচালনা না করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের অনুরোধ জানান সুজন। রি-রোলিং মিলসহ যেসব কারখানায় বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় সেখানে রাতের বেলা উৎপাদন ব্যবস্থা চালু রাখলে শিল্পকারখানা এবং আবাসিক খাতে বিদ্যুতের ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। সরকারের বাস্তবমূখী নানা পদক্ষেপের ফলে বিদ্যুতের সরবরাহ আগের তুলনায় অনেকাংশে স্বাভাবিক হয়েছে উল্লেখ করে সুজন বলেন সরকার বারবার এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করার কথা বললেও কিছু কিছু এলাকায় বর্ণিত নির্দেশনা না মেনে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্যও নষ্ট হচ্ছে। এতে করে গ্রাহকগণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। সুজন আরো বলেন প্রি-পেইড মিটার স্থাপন বিদ্যুৎ বিভাগের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে গ্রাহকগণ একদিকে নানাবিধ হয়রানি থেকে মুক্ত হয়েছেন, অন্যদিকে শতভাগ বিল আদায় নিশ্চিত, সিস্টেম লস হ্রাসের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের রাজস্ব আয় অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও নগরীর অধিকাংশ এলাকা প্রি-পেইড মিটারের আওতার বাহিরে। তাই গ্রাহক ভোগান্তি নিরসন এবং সরকারের রাজস্ব আদায় ত্বরান্বিত করতে পুরো নগরীকে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনার প্রকল্প গ্রহণের অনুরোধ জানান খোরশেদ আলম সুজন।