বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২৮ ও ২৯ তারিখে (জুলাই) বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ পুরো বোল্ড আউট হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ বুঝতেই পারেনি, কোন দিক দিয়ে বলটা আসতেছে।তিনি বলেন, ‘এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। এই সরকার এত ভীত যে, একটা প্রোগ্রামে তারা ১২শ’-১৩শ’ লোককে গ্রেফতার করেছে।’
সোমবার (৩১ জুলাই) বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের ‘হামলা এবং গ্রেফতারের’ প্রতিবাদে এই সমাবেশ করছে দলটি।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত জনসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালাম।
মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন সমাবেশ সঞ্চালনা করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই অবৈধ সরকারের পুলিশ ২৭ তারিখ সমাবেশ করতে দিলো না। আমরা বললাম, ২৮ তারিখ করবো। ২৮ তারিখ যখন দেখলো লাখ লাখ মানুষ, সবাই একটাই মেসেজ দিয়েছে হাসিনাকে— অবিলম্বে গদি ছাড়ো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটা ছোট্ট প্রোগ্রাম দিয়েছি ঢাকার প্রবেশমুখে অবস্থান। আমরা অবরোধ করিনি, হরতালও দেইনি। আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে একটা অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছি। সেটাতে তারা ভয়ে ভীত হয়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে, আর্মার্ড কার নিয়ে, তাদের সব গুণ্ডা বাহিনী নিয়ে, আর হাজার হাজার পুলিশ-বিজিবি যুদ্ধের সাজে সজ্জিত হয়ে এই জায়গাগুলোতে (বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির স্থান) অবস্থান নিয়েছে। তারা নিরস্ত্র নিরীহ জনগণের ওপর গুলি চালিয়েছে।’
‘এই সরকার ব্ল্যাকমেইলার’ মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। আমানউল্লাহ আমানকে পিটিয়েছে। তাতে আবার একটা নাটক করেছে। আগের থেকে একটা গল্প তৈরি করেছে, করে সেটা ভিডিও করেছে। কত বড় ব্ল্যাকমেইলার। কত বড় দুর্বল। জনগণের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক থাকে না, তারাই এই ধরনের ব্ল্যাকমেইল করে। এই ধরনের গল্প তৈরি করে। এদেশের মানুষ কি সেই গল্প খেয়েছে? তাতে করে কি গয়েশ্বর বাবু ছোট হয়ে গেছে? তাতে করে কি আমানউল্লাহ আমান ছোট হয়ে গেছে? ছোট হয়েছো তোমরা— যারা এই ধরনের নিকৃষ্ট ধরনের নাটক সাজিয়েছো।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। এই সরকার এত ভীত যে, একটা প্রোগ্রামে তারা ১২শ’-১৩শ’ লোককে গ্রেফতার করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আন্দোলন-সংগ্রাম দেখে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ভয় না পাওয়ার’ বক্তব্য প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাহলে ভয় পাচ্ছেন, যে অন্যায়- অত্যাচার নিপীড়ন ১৪-১৫ বছর ধরে… ৬শ’ মানুষকে গুম করেছেন। বিনা বিচারের হত্যা করেছেন। লাখো লাখো মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। তাতে ভয় তো পেতেই হবে। তারপরও বলি, এখনও সময় আছে। জনগণের ন্যায় সঙ্গত আন্দোলন, বৈধ আন্দোলন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দেবেন না।’
জনসমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আন্দোলন করতে গেলে রাস্তা থেকে আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নেতাকর্মীরা রাস্তায় হাঁটতেও পারবে না? কথাবার্তা বলতে পারবে না? আমরা কি বাংলাদেশের রাস্তা কারও কাছে ইজারা দিয়েছি নাকি? আপনারা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন, অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছেন। তারপরও কোনও ধরনের সমাবেশ বা আন্দোলন বন্ধ হবে না। এই জনগণ আওয়ামী লীগের পতন ছাড়া অন্য কিছু কামনা করে না।’
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।