চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, মানুষ প্রকৃতিকে জয় করেছে, পাশাপাশি প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট করে মানুষেই সৃষ্টি করেছে সংকট। এই সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য জনসচেতনতার বিকল্প নেই। জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেকসই বন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ ও বনসংরক্ষণকে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। সবুজের প্রতি যত্ন নিয়ে বিশুদ্ধ নিঃস্বাস নিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নান্দনিক চট্টগ্রাম গড়ে তোলার প্রত্যয়ে সবুজ বিপ্লবের এই মহোৎসবের আয়োজন করে। তিনি প্রসঙ্গ ক্রমে বলেন চট্টগ্রাম সর্বক্ষেত্রে এবং সর্ব আয়োজনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে অবিভক্ত ভারতে সর্বপ্রথম চট্টগ্রাম থেকে আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করা হয়েছিল। যে কারণে স্বয়ং মহত্মা গান্ধি কংগ্রেসে নাগপুর সম্মেলনে বলতে বাধ্য হয়েছিলেন চট্টগ্রাম সবার আগে। শুধু তাই নয় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য তাঁর কবিতায় চট্টগ্রামের মানুষের সাহসী ভূমিকার প্রসংশা করে লিখেছিলেন বীর চট্টগ্রাম কবিতা। চট্টগ্রাম প্রাকৃতিকভাবে প্রাচ্যের রানী হিসেবে একসময় স্বীকৃত ছিলো। আমরাই সেই রানীর রূপ লাবণ্য ধ্বংস করেছি। এই দায় আমাদের নিতে হবে। তাই নান্দনিক চট্টগ্রাম এই কর্মসূচি গ্রহণ যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, সবুজায়ন সম্পর্কে যদি আমরা স্কুল কলেজে ছেলে মেয়েদের সচেতন করতে পারি তাহলে চট্টগ্রাম নগরীকে সবুজায়ন নগর হিসেবে গড়তে সক্ষম হবো। আজ শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম রেডিসন ব্লু-বে ভিউ মেজবান হলে লাল গালিচা ফটোশুটের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও তিলোত্তমা চট্টগ্রামের আয়োজনে নান্দনিক চট্টগ্রাম মেয়র অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিলোত্তমা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সাহেলা আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন-চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এইচ এম পেয়ারুল ইসলাম, চসিক প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, স্থপতি শাহীনুল ইসলাম খান, তিলোত্তমা’র উপদেষ্টা স্থপতি আশিক ইমরান, এস এম আবু তৈয়ব, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র দত্ত, এয়ার বাংলা’র চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ুম চৌধুরী। এতে উপস্থিত ছিলেন চসিক প্যানেল মেয়র ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর আফরোজা কালাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজি নুরুল হক, ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী, ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, মোহাম্মদ জাবেদ, আবদুস সালাম মাসুম, নুরুল আমিন, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সংরক্ষিত কাউন্সিলর লুৎফুননেচ্ছা বেবী দোভাষ, জেসমিন পারভিন জেসী, ফেরদৌসী আকবর, জাহেদা বেগম পপি প্রমুখ।
সিটি মেয়র আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সবুজ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের সাথে সমুৎসাহিত হয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামে চলছে সবুজায়নের নীরব বিপ্লব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বারোপ করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর বৃক্ষরোপণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি গণভবন ও বঙ্গভবনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে গাছ লাগিয়েছেন। সবুজায়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে ও নান্দনিক চট্টগ্রাম তিলোত্তমা চট্টগ্রামের সহযোগিতায় মেয়র অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে।
শুরুতেই বিকাল সাড়ে ৫টায় অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী ও অতিথিদের আসন গ্রহণ, সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের অনুভূতি প্রকাশ, সন্ধ্যা ৭টায় অ্যাওয়ার্ড প্রদান, রাত ৮টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ৩ ক্যাটাগরিতে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। যা দেশে প্রথম নান্দনিক চট্টগ্রাম মেয়র অ্যাওয়ার্ড। নান্দনিক ছাদ বাগান অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন- জুলফিকার আলী ভুট্টো ও কাজী মনিরুল ইসলামী, নাছরীন ফাতেমা জুলি, মোনোয়ারা আখতার সিদ্দিকা।নান্দনিক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন-সিপিডিএল, র্যাংক্স এফ সি প্রোপার্টিজ-মেমরী ৭১, বাটারফ্লাই পার্ক। এবং নান্দনিক সংগঠনের অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন-তারুণ্যের প্রতিক ও বই বন্ধু।