১৩ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ || ২৭শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বিশ্বের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন বাংলাদেশে তাদের দীর্ঘদিনের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি লোকসানের মুখে পড়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে  বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) গ্লাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে) বাংলাদেশ-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকায় জিএসকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি সভায় ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিট বন্ধের ঘোষণা আসার পর চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে বিক্ষোভ করে তাদের কারখানার শ্রমিক কর্মচারীরা। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ব্যবসায়িক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বাণিজ্যিকভাবে লোকসানে পড়া তাদের ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের সব উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের প্রস্তাব করেছে। তবে জিএসকে বাংলাদেশ তাদের কনজিউমার হেলথকেয়ার ব্যবসা চালিয়ে যাবে এবং ফার্মাসিউটিক্যাল ব্যবসা বন্ধের কোনো প্রভাব তাতে পড়বে না।

ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিট বন্ধ হওয়ার কারণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়া এক হাজারের বেশি কর্মীকে যথাযথ প্রাপ্য পরিশোধ এবং দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

জিএসকে বাংলাদেশ আশা করছে, ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিট বন্ধের সব প্রক্রিয়া চলতি বছরের মধ্যেই শেষ করতে পারবে তারা।

জিএসকে বাংলাদেশের হেড অব কমিউনিকেশনস রুমানা আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ফার্মাসিউটিক্যাল বিজনেস ইউনিটের উৎপাদন ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধের বিষয়ে আজ ঢাকায় একটি সংবাদ সম্মেলন হবে। সেখানে আপনাদের জিজ্ঞাসার উত্তর আমরা দেব।’

জিএসকে এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইলিয়াস জানান, ফৌজদারহাটের কারখানায় পাঁচশয়ের মতো স্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করে আসছিলেন। আর সারাদেশে রয়েছেন আরও পাঁচশ’ স্থায়ী বিক্রয় ও বিপণনকর্মী। এছাড়া প্রায় পাঁচশ’ অস্থায়ী কর্মচারী রয়েছেন এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে। তিনি বলেন, ‘জিএসকে-এর দক্ষিণ এশিয়ার রিজিওনাল হেড অব সাপ্লাই চেন রাজু কৃষ্ণ স্বামী বাংলাদেশে কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। আমাদের একটাই দাবি, তাকেই কারখানা পুনরায় চালুর ঘোষণা দিতে হবে। তা না হলে আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলতে থাকবে। দেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বার্থে এবং ওষুধ শিল্পের স্বার্থে এ কারখানা চালু রাখতে হবে ‘

ইলিয়াস বলেন, ‘গত কয়েক বছরে কারখানার সংস্কারের নামে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। ছয় মাস ধরে বিজনেস রিভিউ করার কথা বলা হচ্ছে। হঠাৎ লোকসানের কথা বলে কারখানা বন্ধ করা হলো অথচ ২০১৭ সালেও কারখানা লাভজনক ছিল।’

জিএসকে এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আজম বলেন, ‘গতদু’দিন কারখানায় কোনো কাজ হয়নি। বারবার আমরা জানতে চাইলেও আগে কিছু বলা হয়নি। এখন হঠাৎ করে কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এটা আমরা মানি না।’