১৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ || ৩রা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

‘আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র দেশের জনগণের কাছে দায়বদ্ধ’ মন্তব্য করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণই আমাদের প্রভু। জনগণের কাছেই আমরা দায়বদ্ধ।

রবিবার (৬ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের প্রায় তিন হাজার নেতা এবং জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে এই বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা সভায় যোগ দিয়েছেন। এছাড়া জাতীয় সংসদের দলীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যান, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার দলীয় মেয়র এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও সভায় উপস্থিত রয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ২০২৬ সালে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। জনগণ চাইলে দেশ এগিয়ে যাবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে দেশকে এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে হবে।’

বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কী চায়— বাংলাদেশ এগিয়ে যাক? বাংলাদেশের জনগণই ভোটের মালিক। তারা যদি চায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, তাহলে আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে।’

তিনি বলেন, জনগণই ভোটের মালিক, আওয়ামী লীগকে ভোট দিলেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে চলতে পারবে এ দেশের মানুষ।

জেলা ও উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের পদচারণায় গণভবন প্রাঙ্গণ আজ  ধন্য। অনেকদিন পর আপনাদের সঙ্গে কথা বলার একটা সুযোগ হলো।

বিএনপির ‘দুর্নীতি ও দুঃশাসনের ফলে’ এ দেশে সামরিক শাসন জারি হয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করতে আওয়ামী লীগই সংগ্রাম করেছে

সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় বক্তৃতা করছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছিলেন। ৩-৪ শতাংশও ভোট পড়েনি। কিন্তু তিনি ভোট চুরি করে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশের মানুষ এই ভোটচুরি মেনে নেয়নি। বাংলাদেশের মানুষ ভোট চুরি করলে মেনে নেয় না। কাজেই ৩০ মার্চ খালেদা জিয়া ভোটচোর হিসেবে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এরপর ১২ জুন যেই নির্বাচন হয়, সেটিতে আমরা জয়ী হয়ে সরকার গঠন করি।

তিনি বলেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিল আওয়ামী লীগ।

পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। আমি জোর করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। খালেদা জিয়া দিয়েছিলেন ১২টি আর জরুরি সরকার দিয়েছিল ৬টি মামলা।

তিনি বলেন, আমি দুর্নীতি করতে এখানে আসিনি। আমি মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, নিজের ভাগ্য না। আমি ত্যাগ করতে এসেছি, ভোগ করতে না।

স্বাধীনতার পরে একটি ‘চক্রান্ত’ শুরু হয়েছিল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, সেই চক্রান্তে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের হত্যা করা হয়। ২১ বছর আমাদের শুধু আহতদের চিকিৎসা ও লাশ টানতে হয়েছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। মানসিক শক্তিই আওয়ামী লীগের শক্তি।

তিনি আরও  বলেন, পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করেছি বলে সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।

দুটি ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে, এমন একটি লেখার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এনজিও অনেক কাজ করেছে। তবে দুটি এনজিও’র কারণে দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে, এটি সত্য নয়। এনজিও’র কারণে দারিদ্র্য বিমোচন হলে এতদিন হলো না কেন? উচ্চহারে সুদে দারিদ্র্য বিমোচন হয় না। বরং তাদের ঋণের কারণে অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করতে বাধ্য হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া সবাই খুনি। এই খুনিদের হাতে এ দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণের পাশে থাকে।উপকৃত হয় জনগণ ।’