ক্রীড়া প্রতিবেদক *
সরকার পতনের পর পুরো দেশেই দাবি দাওয়া আদায়ে সভা-সমাবেশ চলছে। এর বাইরে নয় ক্রীড়াঙ্গন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর প্রায় প্রতিদিনই দেখা গেছে, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে অনেককে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের প্রাঙ্গণে ভিড় করতে। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন দেশের ৬৪ জেলার ক্রিকেটাররা। তারা বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ বরাবর ১৭ দফা দাবি পেশ করেছেন। বিসিবি অবশ্য ক্রিকেটারদের বেশিরভাগ দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসও দিয়েছে।
রবিবার (৮সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিসিবির নবনির্বাচিত বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ ও নতুন বোর্ড পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের ছবি সংবলিত ব্যানার নিয়ে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ক্রিকেটাররা হাজির হয়েছিলেন। জেলা ক্রিকেটকে নতুন করে সাজাতেই তাদের এই উদ্যোগ। ঘরোয়া ক্রিকেটের নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডারের পাশাপাশি তারা জাতীয় ক্রিকেট লিগের প্রত্যেক বিভাগে দ্বিতীয় সারির আরেকটি দল রাখার দাবি জানান। ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে প্রতি বছর তিন সংস্করণের লিগ আয়োজনের কথাও বলেন তারা। বিশেষ করে প্রথম বিভাগে আলাদা করে টি-টোয়েন্টি আয়োজনের ওপর জেলার ক্রিকেটাররা গুরুত্ব দিয়েছেন।
এর বাইরে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের সেরা ৩০ জন ক্রিকেটারসহ ৯০ জন ক্রিকেটারকে তারা বেতনের আওতায় আনার কথা বলেছেন। দাবির মধ্যে বোর্ডের অধীনে ক্যাম্পিংয়ের সুযোগের কথাও বলা হয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রশ্নবিদ্ধ আম্পায়ারিং ও ভালো উইকেটে খেলার নিশ্চয়তা তারা চেয়েছেন।
ক্রিকেটারদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (কোয়াব) । এই সংগঠনকেও ঢেলে সাজানোর দাবি তাদের। কোয়াব যেন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে চলে, সেই নিশ্চয়তা তারা চেয়েছেন।
১৭ দফা দাবি নিয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের খেলোয়াড় রিয়াজুল রিয়াদ সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘অনেক দিন ধরেই অনিয়ম হয়ে আসছে। যদি বিসিবি আশাবাদ ব্যক্ত করে, তাহলে আমরা আশা করছি দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান হবে।’
প্রথম বিভাগ লিগের আরেক ক্রিকেটার রিয়াজুরের কথা, ‘বিসিবিকে প্র্যাকটিসের সুযোগ–সুবিধা বাড়ানোর কথা বলে এসেছি। এখানে দেখেন যখন বিপিএল খেলা হয়, একই একাডেমি মাঠে ছয়-সাতটা দল অনুশীলন করে। অথচ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড চাইলে কিন্তু এমন পাঁচটা একাডেমি করে দিতে পারে বিভিন্ন জায়গায়। যদি মাঠের সংখ্যাও বাড়ে, তাহলেও আলহামদুলিল্লাহ।’
জেলার ক্রিকেটারদের দাবি দাওয়ার ব্যাপারে বিসিবির নতুন পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেছেন, ‘ক্রিকেট বোর্ড কী করলে আমার লাভ হবে বা তোমার লাভ হবে, সেটা নয়…কী করলে ক্রিকেটের লাভ হবে, এখন সেটা দেখা দরকার। সেটার জন্য যা যা করা দরকার, ক্রিকেট বোর্ড সামর্থ্য অনুযায়ী সেই জিনিসটা করবে। জেলা ক্রিকেট চালু করা, জেলা পর্যায়ে একটা উইকেট থাকা শুরু করে প্লেয়ারদের ওয়েলফেরার…প্রতিযোগিতা বাড়ানোর কথা যদি বলি, সিস্টেমেটিক্যালি সবখানে যেন ফেয়ারলি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ট্যালেন্ট আইডেন্টিফিকেশনের জন্য সবাই যেন সমান সুযোগ পায়, এসব ব্যাপার অবশ্যই ক্রিকেট বোর্ড দেখবে। আমরাও চোখ রাখবো। তোমরা একটা ব্যাপার নিশ্চিন্তে থাকতে পারো, ক্রিকেট বোর্ড তার সামর্থ্য অনুযায়ী তোমাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবে। ’