১৩ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ || ২৭শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

পদ্মাসেতু, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল তৈরিসহ নানা উন্নয়নের মাধ্যমে সরকার আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান।

শনিবার (০৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশা্সন আয়োজিত চতুর্থ উন্নয়ন মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. আবদুল মান্নান বলেন, এক সময় পানির নিচে টানেল দেখতে চীন, লন্ডনসহ উন্নত দেশে পাড়ি জমাতো দেশের মানুষ। কিন্তু এখন আর বিদেশে পাড়ি জমানো লাগবে না। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেকাংশ কাজ শেষ হয়েছে। টানেলের সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে মানুষ এ টানেলের সুবিধা উপভোগ করতে পারবে।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে গেছেন। সেখানে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধান ও প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীকে বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘বিশ্বের ৩০টি দেশ আছে, যাদের ১০ লাখের বেশি জনসংখ্যা নেই। অথচ আপনি ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের খাবারের ব্যবস্থা কীভাবে করলেন, সিকিউরিটি-বা কীভাবে মেইনটেইন করলেন’’?

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বিশ্ব নেতারা এজন্য শেখ হাসিনাকে বিশ্বের নেত্রী বলে উপাধি দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে মানবিক ও দায়িত্বশীল নীতির জন্য তাকে মর্যাদাপূর্ণ ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘২০১৮ স্পেশাল ডিস্টিংকশন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং অ্যাচিভমেন্ট’ দেওয়া হয়েছে।

সরকারের গত ১০ বছরে উন্নয়নের বর্ণনা এক ঘণ্টায়ও বলে শেষ করা যাবে না দাবি করে তিনি বলেন, এ সরকার যাদের বাড়ি নেই তাদের বাড়ির ব্যবস্থা করছে। যাদের বাড়িও নেই, জায়গাও নেই তাদের দুটিই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি উদ্যোগের মধ্যে এটিও একটি উদ্যোগ। দেশের কোনো মানুষকেই গৃহহীন থাকতে দেওয়া হবে না।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, উন্নয়নের কোনো শেষ নেই। উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এখন বাংলাদেশের অর্থনীতি এতো সমৃদ্ধ যে, বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশ অর্থনৈতিক মন্দায় আক্রান্ত হলেও বাংলাদেশে তার কোনো প্রভাব পড়েনি।

তিনি বলেন, যদিও ২০১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬ সালে দেশকে একটি মহল অরাজকতার দিকে ঠেলে দিয়েছিল। তারা চেয়েছিল বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে জঙ্গিদের সমূলে উৎপাত করা হয়েছে। জঙ্গিরা আবারও চক্রান্ত চালাতে পারে এ জন্য দেশের মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।

জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, সরকারের উন্নয়ন চিত্র সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে উন্নয়ন মেলার এ আয়োজন। এর মাধ্যমে গত এক দশকে দেশ কতটুকু এগুলো তা যেমন মানুষ জানতে পারবে, তেমনি ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে কী কী প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তারও ধারণা পাবে।

এ সময় তিনি এবারের উন্নয়ন মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) নুরুল আলম নিজামী, সিভিল সার্জন মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন ও মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদ।

পরে অতিথিরা কুইজ প্রতিযোগিতা এবং সেরা স্টল ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন।

সরকার গত এক দশকে যেসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও গ্রহণ করেছে, তা জনগণকে জানাতেই মাঠ পর্যায়ে তিন দিনব্যাপী এ উন্নয়ন মেলার আয়োজন কর হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) দেশব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন।