রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, গান দিয়ে যিনি দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনে নিজেকে পরিণত করেছেন উপমহাদেশের একজন প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পীতে। যার কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের গান সবসময়ই পেয়েছে অন্যরকম দ্যোতনা। আজ ৬৩ বছরে পা রাখলেন কিংবদন্তীতুল্য এই শিল্পী। ১৯৫৭ সালের ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশের রংপুর জেলায় এক উপাধ্যক্ষের পরিবারে এ গুণী শিল্পী জন্মগ্রহণ করেন।
ব্যক্তিজীবনে সদা হাস্যোজ্জ্বল বন্যার ‘বন্যা’ নামটি তার মরহুম বাবা মাজহার উদ্দিন খানের রাখা। অর্থনীতি বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন বন্যা। সঙ্গীত ভুবনেও তার পড়াশুনা বিস্তর। তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত ছাড়াও ধ্রুপদী, টপ্পা ও কীর্তন গানের উপর শিক্ষা লাভ করেছেন। প্রাথমিক অবস্থায় বন্যা ‘ছায়ানট’ ও পরে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বুলবুল ললিতকলা একাডেমীতেও তিনি ভর্তি হয়েছিলেন। সঙ্গীত ভুবনে এসে তিনি শান্তিদেব ঘোষ, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীলিমা সেন, এবং আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সঙ্গীতজ্ঞদের সান্নিধ্য লাভ করেছেন।
বন্যার গানের দু’শতাধিক সিডি রয়েছে এপার বাংলা ও ওপার বাংলায়। তিনি নিজের গায়কী ও রবীন্দ্রসঙ্গীতের জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে ১৯৯২ সালে গড়ে তুললেন ‘সুরের ধারা’। রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রচার ও প্রসারে সুরের ধারা স্কুলের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘সুরের ধারা কলেজ অব মিউজিক’।
সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে কাজের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার সম্মাননা পেয়েছেন। ২০১৭ সালে ভারত সরকার তাকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘বঙ্গভূষণ’ পদক দিয়ে সম্মানিত করে। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদক ট্রাস্ট ফান্ড’ কর্তৃক প্রদত্ত ‘ফিরোজা বেগম স্মৃতি স্বর্ণপদক ও পুরস্কার ২০১৭’ পেয়েছেন প্রখ্যাত এ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী।
রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সঙ্গীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপার্সন হিসেবে কর্মরত আছেন।