১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ || ২৮শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

মোহাম্মদ ইউসুফ

সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের ১১জানুয়ারির আগের ৯০দিনের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই হিসেবে এ বছরের ডিসেম্বরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সকল রাজনৈতিকদলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক। তাই, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় এনে সম্ভাব্যসব প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ আগেভাগেই ৩শ’ এমপিপ্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে জোরেশোরে কাজ করছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়নের বিষয়টি জানিয়ে দেবে। বর্তমান এমপি ও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ দূর করতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মাঠপর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি জরিপের ভিত্তিতে ৩শ জনের (মন্ত্রী-এমপি)মধ্য থেকে আওয়ামী লীগ ১৪০জন দলীয়প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করেছে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের ১১জনের(মন্ত্রী-এমপি) নাম এ তালিকায় রয়েছে। রাঙ্গামাটিতে দীপঙ্কর তালুকদার এবার দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন। বর্তমানে এ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্য ঊষাতন তালুকদার।
দলীয় নেতা-কর্মী ও জনগণের মধ্যে যারা অপেক্ষাকৃত গ্রহণয়োগ্য, যাদের মনোনয়ন দিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে জয়লাভে সক্ষম হবেন- আওয়ামী লীগ তাদেরই মনোনয়ন দেবে। বাকি দেড়শতাধিক নেতা (মন্ত্রী-এমপি)এবার জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না। পুরোনোদের অনেকেই বাদ পড়ছেন, সম্ভাবনাময় অনেক নতুনমুখ এবার যুক্ত হচ্ছেন। গতবার বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় বিশেষ পরিস্থিতির কারণে দলীয় নেতাকর্মীরা কোনোদিন যাদের কখনো দেখেননি, চিনতেন না এমন অনেককে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় গতবারের মতো যেনতেনভাবে দলীয় মনোনয়নের সুযোগ এবার আর থাকছে না। শেখ হাসিনা নিজেই সকল মন্ত্রী-এমপির অতীত কার্যক্রম তদারকি করছেন। তাদের কার্যক্রমের মূল্যায়ন প্রতিবেদনও তাঁর হাতে রয়েছে।
আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্যে অগ্নিপরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জিং। জাতীয় অগ্রগতি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জেতার কোনো বিকল্প নেই বলে দলীয় নীতিনির্ধারকদের অভিমত। আওয়ামী লীগ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মতে, “কোনোকারণে যদি আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় আসতে না পারে তাহলে শুধু উন্নয়নের গতি অবরুদ্ধ হবে তা নয়, সারা দেশ মহাবিপর্যয়ের কবলে পড়বে। লাশের পাহাড় তৈরি হবে, রক্তবন্যায় ভেসে যাবে সমগ্র দেশ।”
সবকিছু মিলিয়ে এবারের সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত। তাই অনেক ভেবেচিন্তে, চুলচেরা বিশ্লেষণ করে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপিপ্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে। দল ও দলের বাইরে যারা তুলনামূলকভাবে জনপ্রিয় ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির অধিকারী এমন নেতাদের নৌকার প্রার্থী করার প্রক্রিয়া চলছে। বিতর্কিত ও জনবিচ্ছিন্ন হেভিওয়েট নেতারাও টের পেয়ে গেছেন মনোনয়ন তালিকায় তাদের নাম আর থাকছে না। এরপরও প্রাথমিকভাবে যে ১৪০জন মন্ত্রী –এমপি’র তালিকা করা হয়েছে সেখানেও অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে নানা গুরুতর কুকর্মের অভিযোগ রয়েছে। দলীয় সূত্রমতে, আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা ও বিকল্প যোগ্যপ্রার্থীর অভাবে সকল আসনে যোগ্যপ্রার্থী মনোনয়ন দেয়া সম্ভব না-ও হতে পারে।
বৃহত্তর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্যে প্রাথমিকভাবে যাদের নাম চূড়ান্ত করেছে তাঁরা হলেন-
চট্টগ্রাম-১ ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রাম-৬ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম-৭ ড. হাসান মাহমুদ চট্টগ্রাম- ১০ ডা. আফছারুল আমীন চট্টগ্রাম- ১১ এম এ লতিফ চট্টগ্রাম -১২ শামসুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম-১৩ সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ।কক্সবাজার- ২ আশেক উল্লাহ রফিক কক্সবাজার-৪ আবদুর রহমান বদি খাগড়াছড়ি- কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা রাঙ্গামাটি- দীপঙ্কর তালুকদার ও বান্দরবান- বীর বাহাদুর উশৈসিং।

লেখক- প্রধানসম্পাদক, চাটগাঁর বাণী।