গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণ জেগেছে, জনগণকে রুখার উপায় কারও নেই। জনগণকে শক্তভাবে দাঁড়াতে হবে। জেলায় জেলায়, থানায় থানায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। রাস্তা, নৌপথ, রেলপথ বন্ধ করে জনগণকে নিষ্ক্রিয় রাখা যাবে না।
সাত দফা দাবি আদায়ে মঙ্গলবার (৬নভেম্বর)রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশের মালিক হিসেবে আপনারা আজ এখানে দাঁড়িয়েছেন। আপনাদেরকে দেশের মালিক ভাবতে হবে। এটা কোনো ব্যক্তির রাষ্ট্র নয়। এদেশে কোনো রাজতন্ত্র নেই, রাজা নেই, মহারাণী নেই। দেশের মালিক ১৬ কোটি জনগণ। সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আমরা দেশে অন্যায় বন্ধ করবো। আমাদের ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। ভোটের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।
দুপুর ২টার দিকে শুরু হওয়া এই সমাবেশে বিএনপির সহযোগী সংগঠন, ঢাকা ও আশপাশের জেলার সাবেক এমপি এবং জনপ্রতিনিধিরা যোগ দেন।
সমাবেশ ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘিরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত ব্যানার ও ফেস্টুন দেখা যায়। এছাড়া বিএনপি নেতাদের ছবিসম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুনও চোখে পড়ে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ড. কামাল হোসেন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এ সরকার যখন গঠন হল তখন আমি কোর্টে ছিলাম, তখন বলেছিলেন আরেকটি নির্বাচন দেব, ২০১৫ গেল, ২০১৬ গেল কই নির্বাচন দিলেন না। এই সরকারের কথার এক পয়সার দাম নেই।
এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ গ্রেফতার রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করে বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই। যেনতেনভাবে বিরোধীদের সবাইকে গ্রেফতার ও হয়রানি করা চলবে না। আইন বিরোধীদলের জন্য একরকম আর সরকারি দলের জন্য একরকম, এটা চলতে পারে না। একটা অনির্বাচিত সরকার এটা করতে পারে না। অমি অবশ্যই খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, সাথে অন্যান্য রাজবন্দিদের মুক্তি চাই।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
জনসভায় প্রথমবারের মতো কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী যোগ দেন।
এছাড়া সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন-নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স ও শামা ওবায়েদ প্রমুখ উপস্থিত হয়েছেন।
এর আগে, মঙ্গলবার সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় জড়ো হতে থাকেন ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীরা।
রাজধানীসহ ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে উদ্যানে প্রবেশ করেন।