আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাতীয় ঐক্যের সমালোচনা করে বলেছেন, এটা আসলে একটা জগাখিচুড়ির জাতীয় ঐক্য। এই জগাখিচুড়ির ঐক্য শেষ পর্যন্ত টিকবে, আমার বিশ্বাস হয় না।
সোমবার(২৪সেপ্টেম্বর) কক্সবাজারের কলাতলী সমুদ্র বিচের পাশে একটি বেসরকারি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারে তিনদিনের নির্বাচনী সড়কযাত্রার শেষদিনে সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। এরপর দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে বিমানযোগে ঢাকা ফিরে যান তিনি।
‘নির্বাচনী ট্রেনযাত্রা ব্যর্থ হওয়ায় আওয়ামী লীগ সড়কযাত্রায় নেমেছে’- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে, নৌকার পক্ষে ট্রেনযাত্রা ও সড়কযাত্রায় অবিশ্বাস্য জনস্রোত দেখে বিএনপি একেবারেই হতাশ হয়ে পড়েছে। সেই হতাশা থেকেই বিএনপি আবোল-তাবোল বকছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পথসভায় লাখ লাখ লোক। এর সমপরিমান জনসমাগম বিএনপি ঢাকায় করে দেখাতে পারবে? পারবে না। এখানেই তাদের গায়ের জ্বালা, অন্তর্জ্বালা। এখানেই তাদের হতাশা।
দলের এই নির্বাচনী ট্রেনযাত্রা ও সড়কযাত্রা সফল দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সব কিছুর কেন্দ্রাতিক শক্তি হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার ব্যক্তিত্ব, তার সরকারের অর্জন, তার সরকারে উন্নয়ন এবং তার সততার প্রতি এদেশের জনগণের গভীর আস্থা আছে। আজ দেশ-বিদেশে তিনি সততার জন্য সমাদৃত ও প্রশংসিত। তার উন্নয়ন, ব্যক্তিত্ব, সৎসাহস, সততার জন্য দেশের মানুষ আজ আস্থার সঙ্গে এই ট্রেনযাত্রা ও সড়কযাত্রার যোগ দিয়েছেন। যে কারণে পথসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। এটা শেখ হাসিনার ম্যাজিক লিডারশিপের সোনালী ফসল।
বেসরকারি ওই রেস্টুরেন্ট পরিদর্শন সম্পর্কে সেতুমন্ত্রী বলেন, এখানে আমার আসার উদ্দেশ্যে হোয়াইট স্যান্ডস বেসরকারি উদ্যোগে পর্যটনের বিকাশে কাজ করছে। আমি ঢাকায় তাদের একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। তখন তারা কক্সবাজারে কী কী করছে সেটা আমাকে জানিয়েছিল। আমি তাদের বলেছিলাম, তাদের পরিকল্পনা কোন কোন এলাকা ঘিরে কক্সবাজার গেলে দেখব।
তিনি বলেন, শুধু সরকারি উদ্যোগ পর্যটন বিকাশে যথেষ্ট নয়। বেসরকারি উদ্যোগ লাগবে। আমি তাদের কাজ দেখে খুশি হয়েছি। পৃথিবীর সবচেয়ে আনব্রোকেন সি বিচ কক্সবাজার। অথচ সন্ধ্যার পর এখানে কোনো ফ্যাসিলিটিস নেই। বড়দেরও জন্য নাই, ছোটদের জন্যও নেই, পর্যটকদের জন্যও নাই। এই হোটেল নির্মাতারা বলেছেন, তারা এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
মেরিন ড্রাইভকে আরও প্রশস্ত করা হবে জানিয়ে কাদের বলেন, রাতের সমুদ্র উপভোগের জন্য এবং পরিবেশটাকে আরও নান্দনিক করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাতে সাগর যাতে দৃশ্যমান হয় সেজন্য লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করব। বেসরকারি উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে এসেছি। তবে অতীতে দেখেছি এই ধরণের উদ্যোগ নিয়ে অনেক প্রতারণা হয়েছে। এই উদ্যোগ নিয়ে যেন প্রতারণা না হয় এটা তাদের প্রতি আমার আহ্বান।
এই সময় তার সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।
শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দলটির এই নির্বাচনী সড়কযাত্রা শুরু হয়। এর আগে গত ৩০ আগস্ট আকাশপথে ঢাকা থেকে সিলেট গিয়ে সেখানে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা-নীলফামারী রুটে নির্বাচনী ট্রেনযাত্রা করেন দলটির উচ্চপর্যায়ের কয়েকজন নেতা। আগামী ২৯-৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা-পটুয়াখালী-বরগুনায় লঞ্চযাত্রা করবেন তারা।