কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ আগামী বুধবার (২৫ জুলাই)। সোমবার রাতে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার শহরের ৩৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সামগ্রী নিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জনসহ মোট ৮৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোজাম্মেল হোসেন জানান, গত ১০ জুন নির্বাচন কমিশন কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র গ্রহণ, জমাদান, বাছাই, আপিল ও প্রত্যাহারের পর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মাঝে গত ৪ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। আর এরপরই শুরু হয় আনুষ্ঠানিক যা সোমবার রাতে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচারণা। আগামীকাল মঙ্গলবার শহরের ৩৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সামগ্রী নিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহ কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন । এছাড়া শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট শহরে টহল দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৮৩ হাজার ৭২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৪৪ হাজার ৩৭৩ জন ও মহিলা ভোটার ৩৯ হাজার ৩৫৫ জন। পৌর এলাকার ৩৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩টিতে ভোটগ্রহণ করা হবে ইভিএম পদ্ধতিতে।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মুজিবুর রহমান (নৌকা), বিএনপির রফিকুল ইসলাম (ধানের শীষ), নাগরিক কমিটির (জামায়াত সমর্থিত) সরওয়ার কামাল (নারিকেল গাছ), জাপার রুহুল আমিন সিকদার (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র জাহেদুর রহমান (হাতপাখা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ওয়ার্ড-১ (১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড)-এ শাহেনা আকতার পাখি (আনারস), আয়েশা সিরাজ (টেলিফোন), বর্তমান কাউন্সিলর হুমায়রা বেগম (অটো রিকশা), টিপু সোলতানা (চশমা) ও ফাতেমা বেগম (জবা ফুল), সংরক্ষিত ২ নং ওয়ার্ডে (৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড) ইয়াছমিন আকতার (চশমা), রেবেকা সুলতানা (আনারস), বর্তমান কাউন্সিলর চম্পা উদ্দীন (টেলিফোন), সংরক্ষিত ৩ নং ওয়ার্ডে (৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) জাহেদা আক্তার (চশমা), জোৎস্না আক্তার (টেলিফোন), সুমা দাশ (আনারস), আয়েশা ইসলাম (বলপেন) ও দ্বীপ্তি শর্মা (জবাফুল) এবং সংরক্ষিত ৪ নং ওয়ার্ডে (১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড) বর্তমান কাউন্সিলর কোহিনুর ইসলাম (আনারস), হোসেন আরা (চশমা), পারভীন আক্তার (জবাফুল) ও নাছিমা আকতার বকুল (টেলিফোন) প্রতীকে এবং সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে রাহামত উল্লাহ (উটপাখি), মোস্তাক আহমদ (টেবিল ল্যাম্প), বর্তমান কাউন্সিলর এসআইএম আক্তার কামাল আজাদ (পাঞ্জাবী) , সিকান্দর আবু জাফর (ব্ল্যাকবোর্ড) ও মো. আতিক উল্লাহ (ডালিম), ২নং ওয়ার্ডে মনির উদ্দীন (ব্ল্যাকবোর্ড), মো. জসিম উদ্দিন (টেবিল ল্যাম্প), হোসাইন ইসলাম বাহাদুর (পাঞ্জাবী), বর্তমান কাউন্সিলর মিজানুর রহমান (পানির বোতল), এম জাফর আলম হেলালী (উটপাখি) ও আবু তাহের (ডালিম), ৩নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম মুকুল (উটপাখি) এবং বর্তমান কাউন্সিলর ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো.মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী (পাঞ্জাবী), ৪নং ওয়ার্ডে নুরুল আবছার (টিউব লাইট), আবদু গফ্ফার (টেবিলল্যাম্প), এরশাদুজ্জামান (ফাইল কেবিনেট) মো. দিদারুল ইসলাম (উটপাখি), জুনায়েদ আহমদ (ব্ল্যাকবোর্ড), মিজানুল করিম (ডালিম), আবু খালিদ (পাঞ্জাবী) ও বর্তমান কাউন্সিলর সিরাজুল হক (পানির বোতল), ৫নং ওয়ার্ডে সাইফুল ইসলাম চৌধুরী (পাঞ্জাবী), সাহাব উদ্দিন (উটপাখি), গোলাম আরিফ লিটন (টেবিলল্যাম্প) ও বর্তমান কাউন্সিলর ছালামত উল্লাহ বাবুল (ডালিম), ৬নং ওয়ার্ডে মো. ফেরদৌস চৌধুরী (ব্ল্যাকবোর্ড), বর্তমান কাউন্সিলর ওমর ছিদ্দিক লালু (টেবিলল্যাম্প), ফাহাদ আলী (গাজর), নাছির উদ্দিন (উটপাখি) মোশারফ আজাদ মনছুর (পাঞ্জাবী), মো. শহীদুল্লাহ (ডালিম), শফিউল আলম (ফাইল কেবিনেট), শাহ আলম (ঢেড়শ), মনিরুল হক (টিউবলাইট) ও সুবদত্ত বড়ুয়া (পানির বোতল), ৭নং ওয়ার্ডে জাফর আলম (পাঞ্জাবী), মুুহাম্মদ রশিদ (উটপাখি), বর্তমান কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামসেদ (টেবিল ল্যাম্প) ও ফোরকান আহমেদ খোকন (ডালিম), ৮নং ওয়ার্ডে বেলাল হোসেন (পাঞ্জাবী), ডালিম কুমার বড়ুয়া (ব্ল্যাক বোর্ড), বর্তমান কাউন্সিলর রাজ বিহারী দাশ (উটপাখি), রাজিব পাল (ডালিম) ও মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম (টেবিল ল্যাম্প), ৯নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মো. হেলাল উদ্দীন কবীর (উটপাখি), মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ (টেবিল ল্যাম্প), আবু ওবায়েদ্দীন নাছের (ডালিম) ও মো. শওকত আলম (পাঞ্জাবী), ১০ নং ওয়ার্ডে সালা উদ্দিন (উটপাখি), কফিল উদ্দিন (টেবিল ল্যাম্প) ও বর্তমান কাউন্সিলর জাবেদ মো. কায়সার নোবেল (পাঞ্জাবী), ১১ নং ওয়ার্ডে আমীর হোসেন (উটপাখি), আবু শাহাদৎ মো. সায়েম (গাজর), মো. সেলিম রেজা (ব্ল্যাকবোর্ড), মো. শফিউল আলম (টেবিলল্যাম্প), নুর মোহাম্মদ (ডালিম), মোহাম্মদ জরিপ আলী (পানির বোতল), মো. হেলাল উদ্দীন (ব্রিজ) ও আহম্মদ হোসেন (পাঞ্জাবী) এবং ১২ নং ওয়ার্ডে আবুল মনছুর (ডালিম), নুরুল ইসলাম (ব্ল্যাকবোর্ড), কাজী মোরশেদ আহম্মদ বাবু (টেবিল ল্যাম্প), মো. জসিম উদ্দীন (উটপাখি) ও কাজী রাশেল আহমেদ (পাঞ্জাবী) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে সরকারদলীয় প্রার্থী মুজিবুর রহমান কক্সবাজারকে মডেল পৌরসভায় রূপান্তর, বিএনপির রফিকুল ইসলাম সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত আধুনিক নগরীতে রূপান্তর এবং নাগরিক কমিটির সরওয়ার কামাল আধুনিক ডিজিটাল নগরীতে রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, বুধবারের নির্বাচনে সুস্পষ্ঠ ব্যবধানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয় হবে যদি বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থী শেষ পর্যন্ত আলাদাভাবে নির্বাচনে প্র্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যান।
এদিকে বিএনপি প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সোমবার বিকাল চারটায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন, নির্বাচনে সরকারদলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশির নামে হয়রানি করছে। রিটার্নিং অফিসারসহ নির্বাচনী কর্মকর্তারা ও সরকারদলীয় প্রার্থীর সুবিধার্থে কেন্দ্র পরিবর্তনসহ তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল, জেলা বিএনপি সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী, সদর বিএনপি সভাপতি আবদুল মাবুদ ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন জিকু প্রমুখ।