ঈদুল আজহায় ১৩ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২৫৯ জন, আহত ৯৬০। গত বারের তুলনায় এবার সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা ১৩.৫০ শতাংশ বেড়েছে। ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন ২০১৮ প্রকাশ উপলক্ষে শুক্রবার(৩১ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এমন তথ্য তুলে ধরেন ।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যায়। যে কারণে সমিতি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টি গত ৪ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে।
মোজাম্মেল হক বলেন, এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঈদযাত্রা শুরুর পর থেকে ঈদ শেষে ঢাকা ফেরার পথে মোট ২৩৭টি দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২৫৯ জনের। গত ১৬ আগস্ট ১৩ দুর্ঘটনায় নিহত ১০ জন, আহত ৪৬, ১৭ আগস্ট ২১ দুর্ঘটনায় মৃত্যু ১৫ জন, আহত হয় ৮৫ জন। দুর্ঘটনার ১৩ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে ২০ আগস্ট। ওইদিন ৩০টি দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় ৪৫ জনের আর আহত হন এক শ’ জন। পরপর আরও দুইদিনে ২৩ ও ২৪ জন মারা যায়।
দুর্ঘটনার যানবাহন পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২৯.১৮ শতাংশ বাস, ২৩.৬ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৬.৬ শতাংশ নছিমন-করিমন, ৫.৯ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ১১.১৫ শতাংশ অটোরিকশা, ৬.৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯.১৬ শতাংশ অন্যান্য যানবাহন দুর্ঘটনায় জড়িত।
দুর্ঘটনার ৩১.৩৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৪৪.৩৫ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ১৭.৫৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১.১০ শতাংশ চলন্ত গাড়ি থেকে পড়ে, ১.২৬ শতাংশ চাকায় ওড়না পেচিয়ে ও ৫.০২ শতাংশ অন্যান্য অজ্ঞাত কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।
একই সময়ে এবার রেলপথে ১৯টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫ জন ও আহত ৭ জন এবং নৌপথে ১৪টি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৪ জন আর আহত হয়েছেন ৬৮ জন।
মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার দফতর থেকে যে সকল নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন হলে সড়কে যে মৃত্যুর গণমিছিল চলছে তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সেইফ রোড অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট এলায়েন্সের আহ্বায়ক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিআরটিএ এর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান খান ও এফবিসিআই এর সাবেক পরিচালক আব্দুল হক।