২৩শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ || ৬ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

দেশের ৪৪টি উপজেলার ৫৭৫ কিলোমিটার রেলপথজুড়ে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে  দ্রুতগতির ইন্টারনেট চালু করতে যাচ্ছে সরকার। এর মাধ্যমে রেলরুটের যাত্রীরা ট্রেনে বসেই পাবেন ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্স, সরকারের ই-সার্ভিসসহ নানা সুবিধা ।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ট্রেন যাত্রীদের উন্নত সেবা দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপদ ট্রেন চলাচল নিশ্চিতেও অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অনেক রেলরুটে অপটিক্যাল ফাইবার না থাকায় বর্তমানে কপার ক্যাবল দিয়ে টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম চালু রয়েছে। কারিগরি বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতায় এ থেকে কাঙ্ক্ষিত সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপিত হবে।

প্রায় ৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি সময় থেকে শুরু করে ২০২০ সালের মধ্যে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ৫৭৫ কিলোমিটার সেকেন্ডারি লাইন অপটিক্যাল ফাইবারভিত্তিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন এবং চালুকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রকল্পটি মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)  সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তোলা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের উপ-প্রধান (রেল পরিবহন উইং) পরিমল চন্দ্র বসু বলেন, প্রকল্পটি মঙ্গলবার একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। আশা করি এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে। যাত্রীসেবা ও রেল পরিচালনার ক্ষেত্রে এটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ৫৭৫ কিলোমিটার রেলপথে সিগন্যালিংব্যবস্থা আর ম্যানুয়ালি হবে না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব কিছু পরিচালনা করা হবে।’

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রেল চলাচল ও যাত্রী সুবিধায় নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। এটা হলে রেলের অপারেশনাল ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে আরো গতি আসবে।

প্রকল্পটি হলে রেল পরিচালনায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগবে, ট্রেন চলবে শিডিউল মতো। কখন ট্রেন কোথা থেকে ছাড়ছে, কখন স্টেশনে আসবে-সেসব তথ্য জানা যাবে।

১৯৯২ সালে নরওয়ে সরকারের অনুদানে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবারভিত্তিক সমন্বিত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। এ নেটওয়ার্কের আওতায় ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার কম্পোজিট ক্যাবল স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ওই উদ্যোগের আওতায় এবার ময়মনসিংহের গৌরীপুর থেকে মোহনগঞ্জ রেলরুটে ৫২ কিমি, নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ থেকে জারিয়া ঝাঞ্জাইলে ২১ কিমি, জামালপুরের তারাকান্দি থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু রুটে ৩৮ কিমি, কুমিল্লার লাকসাম থেকে নোয়াখালী পর্যন্ত ৪৯ কিমি, দিনাজপুর থেকে পঞ্চগড়ে ১০১ কিমি, কাঞ্চন থেকে বিরলে  ৭ কিমি, সৈয়দপুর থেকে চিলাহাটি পর্যন্ত ৫২ কিমি, লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারীতে ৮৪ কিমি, তিস্তা জংশন থেকে রমনা বাজার পর্যন্ত ৪৮ কিমি, রাজবাড়ীর পাচুরিয়া থেকে গোয়ালন্দঘাটে ১১ কিমি, যশোর থেকে বেনাপোল পর্যন্ত ৩৫ কিমি, রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫০ কিমি এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুর থেকে রহনপুর রেলরুটে ২৬ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপিত হবে।