জয়দীপ দে শাপলু * আজ বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে একটা বড়ো ঘটনা ঘটে গেছে। কেনো জানি মিডিয়া এটা নিয়ে খুব একটা কথা বলছে না। আজ সরকার ২৭১ টা কলেজকে সরকারি করেছে। অভিনন্দন জানাই নতুন সরকারি হওয়া কলেজের শিক্ষকদের। যারা সকালেও কলেজে ঢুকেছিলেন বেসরকারি শিক্ষক হয়ে, বিকেলে বেরিয়েছেন সরকারি কলেজের শিক্ষক হয়ে। প্রথমশ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা হয়ে। এটা আমাদের জন্য অনেক বড়ো প্রাপ্তির খবর। অন্তত ১০ হাজার শিক্ষক প্রথম শ্রেণির গ্যাজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা পেতে যাচ্ছেন এক আদেশের বলে! এই অর্জন শিক্ষার, শিক্ষকেরও।
এ সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছিল তখন সরকারি কলেজের সংখ্যা ছিল ২৮৫ টি। আজ তা প্রায় ৬০০! চিন্তা করা যায়। একটা সরকারি কলেজের পেছনে কম করে বছরে ২ কোটি টাকা খরচ যায়। কত টাকার আর্থিক দায় নিলো সরকার! এতো বড়ো কাজের জন্য বুকের পাটা লাগে। এখন গ্রামের ছেলেরা তার উপজেলায় পেয়ে যাবে একটি সরকারি কলেজ। সেখান থেকে সে সর্বোচ্চ ডিগ্রিটি অর্জন করতে পারবে একেবারে নামমাত্র খরচে। এমন একটা সাহসী উদ্যোগ নেয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। তিনি বলেই এ অসম্ভব সম্ভব হয়েছে।
একজন রাষ্ট্রনায়কের বিবেচনাবোধের প্রশংসা করতে হয়। এতো দিন কলেজ সরকারি হওয়ার সাথে সাথে সেই কলেজের শিক্ষকরা বিসিএস এডুকেশন ক্যাডারের সদস্য হয়ে যেতেন। ৩৭ বছর ধরে এই প্র্যাকটিস চলে আসছিল। ফলে বিসিএস দিয়ে আসারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। মফস্বলের কোনো কলেজে আত্তীকৃত হয়ে বদলি নিয়ে শিক্ষকরা চলে আসতেন শহরের কলেজে। ফলে জাতীয়করণকৃত কলেজটি শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়ত। এদিকে বঙ্গবন্ধুকন্যার কড়া নজর। তিনি আজ থেকে ১৩ দিন আগে সরকারিকরণকৃত কলেজের শিক্ষকদের আত্তীকরণের সুনির্দিষ্ট বিধিমালা করে দিয়েছেন। সেই বিধিতে তাদের বদলি থাকবে না। তারা নন ক্যাডার হিসেবে আত্তীকৃত হবেন। পদোন্নতি হবে ওই কলেজের ভেতরেই। আবার যোগ্যদের অধিকার বঞ্চিত করতেই তিনি নারাজ। তাদের জন্য পিএসসি পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডার হওয়ার সুযোগও রেখেছেন।
আজ আমরা আনন্দিত এবং কৃতজ্ঞ মানবতার জননীর প্রতি। আশা করি শিক্ষায় বিনিয়োগ আরো বাড়বে। জ্ঞানভিত্তিক যে সমাজের স্বপ্ন আমরা দেখি তা সত্যি হবে। লেখক- সরকারি কলেজের শিক্ষক।